নিজস্ব প্রতিবেদক: পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার সময় নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী এএফএম ফখরুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে মতিঝিলে তার নিজ কার্যালয় থেকে দুদকের একটি দল ওই কর্মকর্তাকে আটক করে।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ নেবেন এমন তথ্য আগেই জানতো দুদক। তাই দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি দল ফাঁদ পেতে ছিল। বেলা ২টার দিকে এক ব্যক্তির কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিচ্ছিলেন ফখরুল ইসলাম। এ সময় ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
দুদক সূত্র জানিয়েছে, দেশে নৌরুটে চলাচলকারী যান্ত্রিক নৌযানগুলোর নকশা থেকে অনুমোদন করে নৌপরিবহন অধিদফতর। এ অনুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও শিপ সার্ভেয়ার এএফএম ফখরুল ইসলাম ঘুষ না পেলে কোনো নৌযানের নকশা অনুমোদন করতেন না। নৌযানের আকারের ওপর ঘুষের অঙ্ক নির্ধারিত হতো। আর নিজ কার্যালয়ে বসেই নিয়মিতভাবে ঘুষ নিতেন তিনি।
বাধ্য হয়ে ‘নৌযানের নকশা অনুমোদন করে দেওয়ার বিনিময়ে ফখরুল ইসলাম তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন’ মর্মে দুদকের কাছে অভিযোগ করেন নকশা অনুমোদনের জন্য নৌপরিবহন অধিদফতরে জমা দিয়েছেন এমন একজন ব্যক্তি। অভিযোগ পেয়ে সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে দুদক। গতকাল ফখরুল ইসলামের কার্যালয়ে দুদকের লোকজন ওত পেতে ছিলেন। দুপুরে নিজ কক্ষে বসেই তিনি ঘুষের পাঁচ লাখ টাকা নেন ফখরুল ইসলাম। এরপর ভেতর থেকে সংকেত পেয়ে দুদক সদস্যরা ওই টাকাসহ ফখরুল ইসলামকে হাতেনাতে আটক করেছেন।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক নাসিম আনোয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম ঘুষ না নিয়ে নৌযানের নকশা অনুমোদন করেন না। নৌযানের প্রকারভেদে তার ঘুষের রেটও ভিন্ন। নৌযানের আকারভেদে পাঁচ লাখ থেকে ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষের রেট ওঠানামা করে। তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ আছে। কমিশনের নজরে এনে অনুমোদন নিয়ে অনুসন্ধান করা হবে।’
Add Comment