নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যাগ ভর্তি ঘুসের ২৩ লাখ টাকাসহ আটক কাস্টমস কর্মকর্তা খন্দকার মুকুল হোসেন এর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আল আমিন বাদি হয়ে এই মামলা করেছে। খন্দকার মুকুল হোসেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে বেনাপোল কাস্টম হাউসে কর্মরত ছিলেন। টাকাসহ আটকের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে কাস্টম হাউস হতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সম্প্রতি এনবিআরকে প্রতিবেদন দিয়েছে।
দুদক সূত্রমতে, ঘুসের টাকাসহ আটক হওয়ার ৭ মাস পর মামলাটি দায়ের করা হয়। দায়েরকৃত মামলায় খন্দকার মুকুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, খন্দকার মুকুল হোসেন ২০১০ সালে ঢাকায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ক্যাশিয়ার পদে যোগ দেন। ২০১৭ সালের তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পদে উত্তীর্ণ হন। ২০২০ সালের নভেম্বরে বেনাপোল কাস্টম হাউসে যোগ দেন। ঢাকাতে চাকরির সুবাদে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুকুলের সখ্য গড়ে ওঠে। এই সুযোগে বেনাপোল কাস্টম হাউসে দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে আসছেন তিনি।
সূত্রমতে, ২০২২ সালের ২৬ আগস্ট সকালে খন্দকার মুকুল হোসেন ঢাকার উদ্দেশে যশোর বিমানবন্দরে আসেন। এ সময় বন্দরের স্ক্যানার মেশিনে তার বহন করা ব্যাগে বিপুল পরিমাণ টাকার উপস্থিতি পাওয়া যায়। পরে বিষয়টি ঢাকা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে যশোর বিমানবন্দর সিকিউরিটি বিভাগ। ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিমানবন্দরে এভিয়েশন সিকিউরিটি সদস্যরা তাকে আটক করেন। তার ব্যাগ তল্লাশি করে ২২ লাখ ৯৯ হাজার টাকার উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুকুল ওই টাকার উৎস বলতে পারেনি।
সুত্র আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই রাজস্ব কর্মকর্তা জব্দ করা টাকার কোনো উৎস জানাতে ব্যর্থ হন। সিকিউরিটির সদস্যরা তার আইডি কার্ড ও বোর্ডিং পাস কার্ড জব্দ করেন। পরে জব্দকৃত টাকার নম্বরের তালিকা এবং রাজস্ব কর্মকর্তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণে জন্য অভিযোগ বেনাপোল কাস্টম হাউস কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট বেনাপোল কাস্টম হাউস কমিশনার খন্দকার মুকুল হোসেন সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। দুদকের অভিযানে অভিযোগ মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদে অব্যাখ্যায়িত ও অবৈধ অর্থ দখলে রেখে হস্তান্তর করার বিষয়টির প্রাথমিক সত্যতা পায়।