নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের উপকূলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে জানিয়ে সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘গতকাল (বুধবার) জানতে পেরেছি, ভারত মহাসাগরের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের কাছে একটি সাইক্লোনিক সিস্টেম ডেভেলপ করছে। সেটি হয়ত লঘুচাপে রূপান্তরিত হবে, যেটাকে আমরা লো-প্রেশার বলি। এরপর ধীরে ধীরে এটা সুস্পষ্ট লঘুচাপের রূপ ধারণ করবে। এরপর ১১ তারিখের দিকে নিন্মচাপে রূপান্তরিত হয়ে নিন্মচাপ থেকে গভীর নিন্মচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর হওয়ার আশঙ্কা করা যাচ্ছে।’
ওই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে তার নাম হবে ‘আসানি’। এটি শ্রীলঙ্কার দেয়া নাম। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয় বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপ। এ অঞ্চলের ১৩টি দেশের দেয়া নামের তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের নাম ঠিক করা হয়।
এনামুর রহমান বলেন, ‘এটার ল্যান্ডফলটা (যেখানে ঝড় স্থলভাগ অতিক্রম করে) এখন পর্যন্ত ক্যালকুলেশন হয়নি। নিন্মচাপ এবং ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পর জানাতে পারব কবে এটা বাংলাদেশের উপক‚লে আঘাত হানবে।’
ঘূর্ণিঝড়ের আগে আগাম প্রস্তুতির কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বাংলাদেশ একটি ঘূর্ণিঝড়প্রবণ দেশ ও আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, যার জন্য আমরা আজকে এসওডি (দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশবলি) অনুযায়ী প্রাথমিক সভা ডেকেছি।’
তিনি বলেন, ‘এখানে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আলোচনা করেছি। কবে লঘুচাপ, কবে নি¤œচাপ সৃষ্টি হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিটা স্টেপে আমাদের প্রস্তুতি কী, কাদের আমরা সংযুক্ত করব, কাদের দায়িত্ব দেব, কাদের নির্দেশনা দেব সেগুলো আমরা আজ ঠিক করেছি।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সতর্ক সংকেত দেয়ার মতো পরিস্থিতি হলে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করে নির্দেশনাগুলো মাঠপর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবীরা কাজ শুরু করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের যে এসওডি আছে, সে অনুযায়ী কখন কী করতে হবে, সে অনুযায়ী যেটা দরকার ছিল, সবাইকে জানানো, সেটা আমরা জানিয়ে দিয়েছি। সবাই আমরা এখন অ্যালার্ট।’
ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিপি ভলান্টিয়ারদের অবহিত করা, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করা এবং গভীর নি¤œচাপ সৃষ্টি হলে শেল্টার সেন্টারগুলো প্রস্তুত করতে হবে। আমাদের প্রায় ৭ হাজার শেল্টার হাউস আছে, প্রয়োজনে স্কুল-কলেজ এবং অন্যান্য ভবন কাজে লাগাব।’
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় ১৪ হাজারের বেশি শেল্টার সেন্টার প্রস্তুত করে ২৪ লাখের বেশি মানুষকে আশ্রয় দেয়া হয়েছিল বলে জানান এনামুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের সেই ক্যাপাসিটি আছে এবং প্রস্তুতি আছে। আশা করি আমরা সুন্দরভাবে এটি মোকাবিলা করতে পারব।’