নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের চকরিয়ার ভেণ্ডিবাজার এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাইক্রোবাস খাদে পড়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের একজন ঘটনাস্থলে বাকি ছয়জন হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান।আজ রোববার চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ভেণ্ডিবাজারস্থ এটিএন পার্ক কমিউনিটি সেন্টারের কাছে সকাল সাড়ে দশটার দিকে এ মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
চকরিয়া থানা ও মহাসড়কের বানিয়ারছড়া হাইওয়ে পুলিশের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিশু, তিন নারীসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৪ যাত্রী। তন্মধ্যে স্বামী-স্ত্রী এবং মা-ছেলে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে ৬ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- কক্সবাজার সদরের ঘোনার পাড়ার প্রদীপ দের স্ত্রী পূর্ণিমা দে (৩০), তার শিশুপুত্র স্বার্থক দে (৩), চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বৈরাগীর খিল গ্রামের স্বামী-স্ত্রী রতন বিজয় দে (৫০) ও মধুমিতা দে (৪০), ডুলাহাজারার শংকর রুদ্রের মেয়ে রানী রুদ্র (২৪) এবং পথচারী নারী হাজেরা বেগম (৫৫)। তিনি ভেণ্ডিবাজারের পুকপুকুরিয়া গ্রামের মৃত ইসমাইলের স্ত্রী।
আহতরা হলেন- নিহত পূর্ণিমা দে’র স্বামী প্রদীপ দে (৪৫) ও তাদের শিশু কন্যা শ্যামলী (৫), মানিকগঞ্জের বাবর আলী (১৮) ও অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। তন্মধ্যে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী নোয়া (ভক্সি) গাড়িটি (চট্ট মেট্টো-চ- ১১-২৬৯০) ফাঁসিয়াখালী ভেণ্ডিবাজারস্থ এটিএন পার্ক কমিউনিটি সেন্টারের কাছে পৌঁছলে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নারী ধাক্কা দেয়। এ সময় গাড়িটি সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে সজোরে ধাক্কা খেলে গাড়িটির একটি দরজা খুলে ছিটকে পড়ে। এরপর অন্তত ২০ গজ দূরে গিয়ে গাড়িটি সড়ক থেকে গভীর খাদে ডোবার পানিতে ডুবে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেও ২ জন মারা যান।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াসাদ আজিম সিদ্দিকী জানান, এই দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৪ জন যাত্রী। ৩ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অন্যজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ্একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অজ্ঞাত পরিচয়ের লাশটি হাইওয়ে পুলিশের কাছে রয়েছে। বাকি মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, দুর্ঘটনার পর পরই উৎসুক মানুষের ভিড়ে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এ সময় থানার পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা অকুস্থলে ছুটে গিয়ে হতাহতদের একে একে উদ্ধার তৎপরতা চালান। এ সময় গাড়িটি ক্রেন দিয়ে তোলা হয়। এর পর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।