নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের দুই অভিজাত ক্লাব। অভিজাত শ্রেণির আনাগোনা দুইটি ক্লাব উৎসে কর কর্তন করে না। যার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ করফাঁকি দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আয়কর বিভাগ তো আর ছাড়ার পাত্র নই। শেষ অবধি দুইটি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। কর অঞ্চল-৩, চট্টগ্রামের দুইটি বিশেষ টাস্কফোর্স টিমের সদস্যরা এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। দুইটি অভিজাত ক্লাব হলো-চট্টগ্রাম ক্লাব ও চট্টগ্রাম সিনিয়র’স ক্লাব। টিমের সদস্যরা কাগজপত্র জব্দ করেছেন। অবশ্যই দুইটি ক্লাব উৎসে কর হিসেবে ১৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। কর অঞ্চল-৩, চট্টগ্রামের একাধিক কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্দরনগরীর দুইটি অভিজাত ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে উৎসে কর কর্তন না করে ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে তথ্য পায় কর অঞ্চল-৩, চট্টগ্রাম। আয়কর আইন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানের ক্রয়, সরবরাহ ও সেবা খাতে উৎসে কর কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। এনবিআরের নির্দেশনা অনুযায়ী দুইটি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করতে কর অঞ্চল-৩, চট্টগ্রামের কমিশনার মো. আবদুস সোবহান এর নির্দেশে দুইটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। অতিরিক্ত কর কমিশনার, যুগ্ম কর কমিশনার, উপকর কমিশনার ও কর পরিদর্শকদের সমন্বয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। টাস্কফোর্সের সদস্যরা ৫ জুন একই সময় একযোগে দুইটি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করেন। প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী পরিচালিত অভিযানে দুইটি প্রতিষ্ঠানের হিসাবের খাতাপত্র, কম্পিউটারে রক্ষিত তথ্যাবলী, বিভিন্ন বিল ও খরচের বিপরীতে উৎসে কর কর্তনের প্রমাণাদি পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিকভাবে উৎসে কর কর্তন না করার প্রমাণ পায় টিমের সদস্যরা। পরে পর্যালোচনার জন্য দুইটি ক্লাবে কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়।

কর কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, অভিযানের সময় তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম ক্লাব এর পক্ষে চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার এ এস এম সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী ১০ লাখ ১৫ হাজার টাকা এবং চট্টগ্রাম সিনিয়র’স ক্লাব এর পক্ষে চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসার অমিত দাস ৫ লাখ টাকার পে-অর্ডার টাস্কফোর্স টিমের নিকট জমা দেন। সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠান দুইটির হিসাব বিভাগকে টাস্কফোর্স টিমের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়।

একইসঙ্গে আয়কর আইন অনুযায়ী, যথাযথভাবে উৎসে কর কর্তন এবং সরকারি কোষাগারে নির্দিষ্ট সময়ে জমা দেওয়ার জন্য ক্লাব কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হয়। উল্লেখ্য, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ১৪৭ ধারার অধীনে উৎসে কর কর্তন বা সংগ্রহ নিশ্চিতকরণ ও যাচাইকরণ কার্যক্রমে কোন প্রকার বাধা বা অসহযোগিতা করলে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার বিধান রয়েছে। কর অঞ্চল-৩, চট্টগ্রামের আওতাধীন যেসব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে উৎসে কর কর্তন করে কোষাগারে জমা দেয় না, সেসব প্রতিষ্ঠানে একই ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।