সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: ডলার সংকটে ৫০ শতাংশের বেশি পুরোনো জাহাজ আমদানি কমেছে। অন্যদিকে জাহাজ নির্মাণ শিল্পে স্থবিরতা চলছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক মন্দা, ঋণখেলাপি ও এবং বড় ইস্পাত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের নিজ উদ্যোগে অক্সিজেন উৎপাদন করায় সংকুচিত হয়েছে শিল্প খাতে অক্সিজেন গ্যাসের ব্যবহার। এরই মধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। ফলে চট্টগ্রামের সীতাকুুন্ডে উপকূলজুড়ে জাহাজ ভাঙা শিল্পকে কেন্দ্র করে এক দশক আগে গড়ে ওঠা অক্সিজেন কারখানায় উৎপাদন নেমেছে ৫০ শতাংশের কম।
স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটা, ইস্পাত শিল্পে রড উৎপাদনে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়।
ব্যবসায়িক ব্যর্থতা ও খেলাপি ঋণের কারণে একের পর এক ইয়ার্ড বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে অক্সিজেন কারখানাগুলোর চাহিদা দিনের পর দিন কমছে। তাই এ খাতের ব্যবসায়ীরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলো হলো ব্রাদার্স, রিগ্যাল, ফয়জুন, সীমা অক্সিকো, রুবাইয়া, মানতি, মদিনা, এআরএল ও এসএল অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এ তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো সীমা অক্সিজেন, যেটি দুর্ঘটনায় বন্ধ হয়েছে।
অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাসোসিয়েটেড অক্সিজেন লিমিটেডের এক কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, জাহাজ নির্মাণ শিল্প ইয়ার্ডে কাজ তেমন নেই। ফলে আমাদের এখন অক্সিজেনের বিক্রি কিছুটা কমেছে। আমরা ব্যবসা বৈচিত্র্যকরণ করার দিকে মনোযোগ দিচ্ছি। বিশেষ করে বাণিজ্যিকভাবে নাইট্রোজেন, আর্গন গ্যাসে উৎপাদন করার জন্য চিন্তা করছি। আর মন্দার কারণে অক্সিজনের দামও বাড়ানো যাচ্ছে না। যদিও এর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম কয়েকবার বাড়ছে। আমরা প্রতি ঘন ফুট অক্সিজেন ৩০ টাকায় বিক্রি করছি, যা পরিবহন ও শ্রমিকখরচসহ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় পড়ছে।
অপরদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, বেশ কয়েকটা প্রতিষ্ঠান খেলাপি হয়ে ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েছে। সবমিলিয়ে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ার পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে অক্সিজেন উৎপাদন নিয়মিত করা সম্ভব হচ্ছে না। যার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যেগুলো চালু আছে বেশিভাগ কারখানা উৎপাদন সক্ষমতার ৫০ শতাংশও নিচে উৎপাদনে আছে। এতে আয়ের চেয়েও ব্যয় বেশি। সব মিলিয়ে আমরা অক্সিজেন উৎপাদনকারীরা ভয়াবহ সংকটে আছি।