বন্দরনগরী নামে পরিচিত চট্টগ্রামে রয়েছে কুটিরশিল্প থেকে বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান। দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর থাকায় এখানে প্রসার ঘটেছে ব্যবসা-বাণিজ্যেরও। এ অবস্থায় বুধবার শেয়ার বিজে প্রকাশিত ‘চট্টগ্রাম জেলা অর্থনৈতিক শুমারি-২০১৩: জ্বালানি সুবিধার আওতায় নেই ৭২% উৎপাদনশীল প্রতিষ্ঠান’ শিরোনামের খবরটি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকবে। এতে জানানো হয়েছে, এ নগরীতে মোট বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৫৮ হাজার ৬২০টি। এর মধ্যে জ্বালানি সুবিধা ব্যবহার করে ১৬ হাজার ৫২২টি। অর্থাৎ বাকি সব প্রতিষ্ঠান জ্বালানি ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে না, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৭২ ভাগ।
যেসব প্রতিষ্ঠান জ্বালানি সুবিধা ব্যবহার করে, তার মধ্যে বিদ্যুৎ সুবিধা পায় ১০ হাজার ৪৫৩টি। বাকি প্রতিষ্ঠান অন্যান্য জ্বালানি ব্যবহার করে। তাই এ অঞ্চলে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে অনেকে আগ্রহী হচ্ছেন না বলে জানা গেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এখানে শিল্প বিকাশে বড় বাধা জ্বালানি সংকট। সংকটটি কাটিয়ে উঠতে না পারলে এ খাতে তেমন সুবিধা করতে পারবেন না বলে মন্তব্য ব্যবসায়ীদের। তারা আরও অভিযোগ করেন, এখানে অনেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান না করে ঢাকা বা অন্য জেলায় করছেন। এতে রাজধানীর পরিবেশের ওপর এক ধরনের চাপ বাড়ছে। বিভাগীয় বা অন্য শহরগুলোতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়তে পারলে রাজধানীর ওপর যানজট বা আবাসনের মতো চাপ কিছুটা কমবে বলে আশা করা যায়। এতে উন্নয়নেরও বিকেন্দ্রীকরণ হবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের অনেক ব্যবসায়ী মনে করেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য এ নগরী উপযোগী হওয়া সত্ত্বেও তা বিকশিত হচ্ছে না জ্বালানির অভাবে। এখানে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেও প্রধানত গ্যাসের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না অনেকে। বাংলাদেশে আগের চেয়ে জ্বালানি খাতের উন্নয়ন হয়েছে। এর আওতায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে মূলত। বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য সংশ্লিষ্টরা নতুন নতুন প্লান্ট তৈরি করছেন, এটা নিশ্চয়ই ভালো খবর। আগের তুলনায় সৌরবিদ্যুতের ব্যবহারও বেড়েছে। এটা দেশের জন্য ইতিবাচক।
বিদ্যুৎ বা জ্বালানি সরবরাহের জন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে অনেকের কর্মসংস্থান হয়। যদি জ্বালানি সংকটের কারণে কারখানা বন্ধ কিংবা চালাতে না পারেন উদ্যোক্তারা, তাহলে ওই খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান বিকাশের লক্ষ্যে জ্বালানি সরবরাহ বাড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন সংশ্লিষ্টরা এটাই প্রত্যাশা।