চট্টগ্রামে আদালতের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা, থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন আদালতের নাম ব্যবহার করে একের পর এক ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। আর এসব পরোয়ানাপত্র পেয়ে নিরপরাধ ও নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এমন ১৪টি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তথ্য উল্লেখ করে চট্টগ্রাম মহানগরের কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন চট্টগ্রামের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের নাজির মো. আবুল কালাম আজাদ। থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আবুল কালাম আজাদ থানায় দায়ের করা মামলার অভিযোগের বিষয়ে উল্লেখ করেন, সম্প্রতি চট্টগ্রামের কথিত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরীর নাম, সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা যায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারের দপ্তরে। এতে রায় ঘোষণার তারিখ দেখানো হয়েছে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ এবং ধারা ৩২৩, ৩৯৭, ১০৯ দণ্ডবিধি। এ পরোয়ানাটি পেয়ে ১১ অক্টোবর জেলার কাটিয়াদি করগাঁও লামার বাজার এলাকার বিল্লালের ছেলে সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করে সেখানকার থানা পুলিশ। আদালত তাকে ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ১২ অক্টোবর এ বিষয়ে একটি উপনথি আসে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। পরে আদালতের কজলিস্ট, কোট ডায়েরি, প্রসেস রেজিস্টার, পরোয়ানা রেজিস্টার ও পিয়ন বই যাচাই করে রেজাউল করিম চৌধুরী নামে চট্টগ্রামের কোনো চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া পরোয়ানাটি এ আদালত থেকে ইস্যু করা হয়নি এবং এটি সম্পূর্ণ জাল।

ওই অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, এর আগে পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার জনৈক মো. মিজানুর রহমানের নামে ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছে ওই জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তরে। বিষয়টি অবগত হয়ে পরে এ আদালত থেকে সেখানে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটদের নাম, ভুয়া সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে কয়েকটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপারদের দপ্তরে। এর মধ্যে সিআর ৭২৯/২০ হুমায়ুন আহমেদ, সিআর ৮১৫/২০২০ ফাহিমা বেগম লিজা, সিআর ১৭৭১/২০১৩ মো. আব্দুল হাকিম (নিম মণ্ডল), সিআর ৭২৮/২০২০ আব্দুল লতিফ শেখ, ১৬২৭/২০১৮ মোনছের আলী, সিআর ১২২৩/১৮ সিআর ১৯৭৪/২০১৬ মো. চান মিয়া, সিআর ১২২২/১৭ শাহাদাত হোসেন ও সিআর ১৯৭৫/২০১২ মামলায় জনৈক সূর্য্যভানুর নামে ভুয়া গ্রেপ্তারি পারোয়ানা পাঠানোর তথ্য এ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আবুল কালাম আজাদ বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেসির বিভিন্ন আদালতের নাম ব্যবহার করে জাল সিল-স্বাক্ষরে একটি সক্রিয় চক্র ভুয়া গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়ে সাধারণ-নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করে ৪২০, ৪৬৫, ৪৬৬, ৭৭১ ও ১০৯ দণ্ডবিধিতে অপরাধ করেছে। তাই চক্রটিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য মামলাটি করা হয়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০