নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: তেলের দাম ভারতে ১৫ টাকা ও পাকিস্তানে ৩৬ টাকা বেশি। ১০ শতাংশ তেল হয় দেশে। গম ও ডাল আমদানি করতে হয়। আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এক কোটি মানুষকে তেল, চিনি ও ছোলা দিয়েছি সাশ্রয়ী মূল্য। এতে পাঁচ কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছে। যত দিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, ততদিন এটি চলবে। ভর্তুকি দিতে হবে।
গতকাল বিকালে নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে চট্টগ্রাম চেম্বারের মাসব্যাপী মেলা ২৯তম সিআইটিএফ উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, তেলের দাম বাড়ার পর বাম দল আমার পদত্যাগ দাবি করেছিল। বাণিজ্যমন্ত্রীর পদের প্রতি আমার লোভ নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বললেন, যারা পদত্যাগ চেয়েছে তারা তেলের দাম কমাতে পারবে কি না? ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় তেলের দাম না কমালে এটি সম্ভব? দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের অবদান আছে। সরকার ব্যবসা করবে না, ব্যবসায় সহায়তা করবে। কভিড নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর গুষ্টি উদ্ধার হয়েছিল। বৃক্ষের ফলে পরিচয়। বাংলাদেশ সরকার অ্যাডভান্সড চিন্তা করেছিল।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। এমএ লতিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের অবকাঠামো উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছেন। কানেকটিভিটি হচ্ছে দেশের উন্নতি। সরকার স্থিতিশীল বলেই দেশের উন্নতি হয়েছে। দেশে এখন কাজের লোক পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, কতিপয় কুলাঙ্গার ব্যবসায়ীর জন্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী। চট্টগ্রাম দেশের অর্থনীতিতে ভ‚মিকা রাখছে। এ মেলার উদ্দেশ্য স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরা। দুঃখের বিষয় চট্টগ্রামে বাণিজ্যমেলার স্থায়ী জায়গা নাই।
দ্য চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রে জানা যায়, দেশের অন্যতম প্রাচীন বাণিজ্য সংগঠন দ্য চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পায়ন, আমদানি-রপ্তানি, বিনিয়োগ ইত্যাদির ক্ষেত্রে কার্যকর ভ‚মিকা পালনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে কাজ করে চলেছে। গত ২৮ বছর ধরে দেশীয় পণ্যের প্রসার ও প্রচারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজন করেছে। এবারের মেলার ব্যাপ্তি প্রায় চার লাখ বর্গফুট। এতে ১৭টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন, ৩৩টি প্রিমিয়ার স্টল, ৯৯টি গোল্ড স্টল, ৪৮টি মেগা স্টল, ১৪টি ফুড স্টল এবং দুটি আলাদা জোন নিয়ে ৩৭০টি স্টলে ৩১০টির অধিক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এসব স্টলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন। একই সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত গ্রুপ তাদের পণ্যের সম্প্রসারণে বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন সাজিয়ে তাদের পণ্যের সমাহার দর্শকদের জন্য উম্মুক্ত রাখবেন। শুধু দেশীয়রা নয়, মেলায় নিজস্ব পণ্য নিয়ে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশ, যেমন ভারত, থাইল্যান্ড ও ইরান বিভিন্ন স্টলের মাধ্যমে তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। এছাড়া মেলায় একটি আধুনিক বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন থাকবে। এতে বাতিঘরের সহায়তায় বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক বিভিন্ন বই ও প্রকাশনা প্রদর্শনের ব্যবস্থা আছে। মেলায় দর্শনার্থীর টিকিটের মূল্য ১৫ টাকা রাখা হয়েছে।