নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের পটিয়া থানার চরকানাই, হুলাইন, পানচুড়িয়া ও হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব গ্রামে সুপেয় পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এ-সংক্রান্ত এক মামলায় জারি করা রুলের শুনানি শেষে গতকাল বিচারপতি তারিক উল হাকিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। এছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে পানি আইনের অধীনে এই চার গ্রামকে ‘পানি সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করা হবে কি না, তা তিন মাসের মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান।
পরে অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামের পটিয়া থানার চরকানাই, হুলাইন, পানচুড়িয়া ও হাবিলাসদ্বীপ গ্রামের ভূগর্ভস্থ পানি বিভিন্ন শিল্প-কারখানা তুলে নিচ্ছে। এ কারণে ৩০ হাজার গ্রামবাসী পানি পাচ্ছে না। এছাড়া ৩০০ টিউবওয়েল বিকল হয়ে গেছে। এ অবস্থায় হাইকোর্টে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে রিট করা হয়। আদালত রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছিলেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণা করলেন।
এদিকে চট্টগ্রামের পটিয়ার গ্রাম চারটিকে ‘পানি সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০১৩ সালের পানি আইনের ১৭ ধারার অধীনে আগামী তিন মাসের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত নিতে বলেছেন আদালত।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসক ও পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যানকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত।
পাশাপাশি আট শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে এ চার গ্রাম থেকে পানি উত্তোলন বন্ধ রাখাসহ দূষণের মাত্রা যাচাই করে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়েরও নির্দেশ দেওয়া হয় রায়ে। ওই আট শিল্পপ্রতিষ্ঠান হলো: বনফুল অ্যান্ড কোম্পানি, বনফুল মিনারেল ওয়াটার কোম্পানি, আম্বিয়া নিটিং ডায়িং লিমিটেড, আম্বিয়া পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড, মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স লিমিটেড, হাক্কানী পাল্প অ্যান্ড পেপার মিলস লিমিটেড, আনোয়ারা পেপার মিলস লিমিটেড ও শাহ আমানত নিটিং অ্যান্ড ডায়িং লিমিটেড।