Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 8:28 pm

চট্টগ্রামে জমে উঠছে গরম কাপড়ের ব্যবসা

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: চারপাশে হেমন্তের হিম হিম হাওয়া, ভোরের কুয়াশার চাদর, দিনের বেলার ঠাণ্ডা বাতাস, রাতে শীত শীত অনুভূতিই জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। আর এ শীতকে মোকাবিলার জন্য এখন  চলছে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাপড় ক্রয়পর্ব। বন্দরনগর চট্টগ্রামের সবগুলো বিপণী বিতানসহ ফুটপাতজুড়ে দিন রাতে সমান তালে চলছে শীতের কাপড় বিক্রি।

চট্টগ্রাম শহরের বৃহৎ পাইকারি ও খুচরা কাপড়ের বাজার জহুর হকার্স মাকেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সব শ্রেণির মানুষের শীতের কাপড় বিক্রি বেশি হচ্ছে। যার মধ্যে সোয়েটার, ব্লজার,

মাফলার, কম্বলসহ আরও প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড়। এছাড়া লেপ-তোশক তৈরি দোকানগুলো ও ব্যস্ত সময় পার করছে গ্রাহকের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে।

জাহিদ ক্লথের স্বত্বাধিকারী জাহিদ মাসুম বলেন, নি¤œ-মধ্য আয়ের মানুষের প্রতি লক্ষ রেখে এবারের শীতের কাপড়গুলো তোলা হয়। যাতে সুলভে মানুষ তার প্রয়োজনীয় কাপড় কিনতে পারেন।  ফাইরোজ সিকদার নামে এক স্কুলশিক্ষিকা বলেন, এবারের শীতের তেমন পোশাক নেই। তাই বাজার ঘুরে পোশাক দেখছি। পছন্দ ও দর-দামে মিলে গেলে কিনে নেব। আরেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রায়হান ফজল বলেন, শীত এসে প্রকৃতিতে। এর জন্য চাই নতুন ও বাহারি ডিজাইনের শীতের পোশাক। দোকান ভর্তি পোশাকগুলো, কিন্তু দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। তবে কাক্সিক্ষত পোশাকের জন্য একটু দাম বেশি দিতে পারি।

চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলো বিশেষ করে এখানকার গ্রাম অঞ্চলে এ প্রস্তুতিতো চোখে পড়ার মতো। এখন দিন-রাত সমানতালে লেপ, তোশক ও কাঁথা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার লেপ-তোশক কারিগর থেকে আরম্ভ করে গ্রামের নারীরাও। কেউ কেউ আবার পুরোনো শীতবস্ত্র ঠিকঠাক করে নিয়েছেন। অনেকেই আবার নতুন করে লেপ-তোশক বানিয়ে নিয়েছেন। মফস্বলের নি¤œআয়ের মানুষের শীত নিবারণের প্রধান অবলম্বন কাঁথা। অনেক পরিবারের নারী সদস্যরা এখন পরিবারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে কাঁথা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। উপজেলার হাট-বাজার ও মার্কেটগুলোর কাপড়ের দোকানে বেড়েছে ভিড়, গরম কাপড় কেনা-বেচা হচ্ছে প্রচুর। নি¤œবিত্তরা শীত থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের মহিলাদের তৈরি মোটা কাপড়ের কাঁথার দিকে ঝুঁকছে। তাই গ্রামের মহিলারা নকশিকাঁথা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছে এখন। আবার অনেক সৌখিন বিত্তশালীরা গ্রামের অসহায় মহিলাদের টাকা দিয়ে তাদের চাহিদানুসারে নকশিকাঁথা তৈরি করে নিচ্ছেন। তবে এবারের শীতের শুরুতেই গরম কাপড় ও লেপ-তোশকের দাম কিছুটা বেড়েছে ।

চন্দনাইশ উপজেলার রেজিয়া বেগম বলেন, লেপের দাম বেশি চাওয়ায় নিজের বাড়িতে লাল কাপড়, তুলা, সুঁই-সুতা দিয়ে নিজেই লেপ তৈরির কাজ করছি। আমাদের সেই সার্মথ্য নেই।

চকবাজারের লেপ প্রস্তুতকারী মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, শীত আগমনের শুরু থেকে বেশ ভালোই অর্ডার পাচ্ছি। ফলে এখন ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে আমাদের। তিনি আরও জানান, সামনে হিমেল হাওয়া ও শীত যতই বাড়বে বিক্রি ততই বেড়ে যাবে।

গতবছরের চেয়ে চলতি বছরে কাপড় ও তুলার দাম একটু বেশি জানিয়ে লেপ ব্যবসায়ী কবির হোসেন বলেন, পৈত্রিক সূত্রে তার এ ব্যবসায় আসা। শীতের এ সময়টিতে আয় ভালো হয়। সাধারণত কার্তিক মাসের শুরু থেকেই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বছরের এ সময়টুকু বাদ দিলে বাকি অলস সময় পার করতে হয়।