চট্টগ্রামে রিটার্ন জমা দেন না ৫১ শতাংশ ই-টিনধারী 

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে প্রায় এক কোটি মানুষের বসবাস। এ বিপুল জনগোষ্ঠীর মাত্র ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা সাত লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৩ জন। এর মধ্যে নিয়মিত রিটার্ন ও আয়কর দেন তিন লাখ ৭২ হাজার ৮০২ জন। অর্থাৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা ৪৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর ৫১ দশমিক ৫৮ শতাংশ নিবন্ধিত রিটার্ন জমা দেয় না। যদিও শূন্য রিটার্ন জমা দেয়ার সুযোগ আছে। করের আওতা বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলে কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

চট্টগ্রামের বিভিন্ন কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলের অধীনে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৩ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৩ লাখ ৭২ হাজার ৮০২টি। অর্থাৎ চট্টগ্রাম অঞ্চলে আয়কর প্রদানকারীর সংখ্যা ৪৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। আর ৫১ দশমিক ৫৭ শতাংশ নিবন্ধিত ই-টিনধারীরা রিটার্ন জমা দেন না। অথচ ই-টিআইএনধারীর মধ্যে কারও করযোগ্য আয় না থাকলেও তাকে রিটার্ন জমা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রত্যেক ই-টিআইএনধারীর রিটার্ন জমা দেয়া বাধ্যতামূলক। জানা যায়, কর অঞ্চল-১ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৬৩১ জন। এর মধ্যে চালু নথির সংখ্যা ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭২টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ৩ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা। কর অঞ্চল-২ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯৩৬ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৭৮ হাজার ৭৯০টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। এছাড়া কর অঞ্চল-৩ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৮ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৭২ হাজার ৭৪২টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ১ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা এবং অঞ্চল-৪ এর অধীনে ই-টিআইএনধারীর সংখ্যা ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু নথির সংখ্যা ৯০ হাজার ৯৯৮টি। কর আদায়ের লক্ষ্য ৪৯৬ কোটি টাকা। এসব ই-টিআইএনধারীর কাছ থেকেই চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ছয় হাজার ৩০৩ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

তারা আরও জানান, সাধারণ করদাতা ক্যাটাগরিতে করযোগ্য আয় ৩ লাখ টাকার বেশি হলে কর দিতে হবে। তৃতীয় লিঙ্গ, নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের করযোগ্য আয় সাড়ে ৩ লাখ টাকার বেশি হলে কর দিতে হবে। প্রতিবন্ধী করদাতাদের বার্ষিক আয় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতাদের আয় পৌনে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত।

৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিল করতে পারেন করদাতারা। তবে যৌক্তিক কারণে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল না করতে পারলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে আবেদন করে সময় নিতে হবে। আবেদন না করলে তাকে প্রদেয় করের ১০% বা ১০০০ টাকার মধ্যে যা বেশি ওই পরিমাণ অর্থ এবং প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হয়।

করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব কেমন আয়কর আদায়ে এ প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ কমিশনার ইকবাল বাহার শেয়ার বিজকে বলেন, করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব তেমন পড়বে না। কারণ সরকার ৩৮ ধরনের সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন সাবমিটের প্রাপ্তি স্বীকারপত্র জমা দান বাধ্যতামূলক করছে। এ কারণে সবাই সচেতন হচ্ছে। আর আয়যোগ্য আয় না থাকলে সমস্যা নেই। আমরা দেখছি আয়কর দাতারা আগ্রহী হয়ে রিটার্ন জমা দিচ্ছে। সুতরাং আগের চেয়েও বেশি আয়কর আদায় হবে।

তিনি আরও বলেন, আয়কর তথ্য-সেবা মাস উপলক্ষে নভেম্বরজুড়ে চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চল কার্যালয়ে বিশেষ সেবা বুথ বসিয়ে করদাতাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। এসব বুথে রিটার্ন গ্রহণ, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র প্রদান, ই-টিআইএন/ই-রিটার্ন/এ-চালান সংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া আয়কর রিটার্ন ফর্ম, চালান ও সিটিজেন চার্টার সরবরাহের পাশাপাশি আয়কর সম্পর্কিত পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০