Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 9:59 pm

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বিশেষ ট্রেন বন্ধ হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের স্পেশাল ট্রেনটির চলাচলের মেয়াদ আরও ২০ দিন বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করতে চায় কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদার কারণে এ ২০ দিন ট্রেন চলাচল বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম। এদিকে এ রুটে চলাচল করা স্পেশাল ট্রেনটি স্থায়ীভাবে চলাচলের দাবিতে গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সচেতন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে কক্সবাজার আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি সালাউদ্দীন মো. রেজাসহ বিশিষ্টজনরা বক্তব্য দেন।

সেখানে বক্তারা বলেন, মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ হলে এ রুটের বাকি দুই আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার স্পেশাল ও পর্যটন এক্সপ্রেসের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হবে। কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন স্থায়ীভাবে চালুর দাবিতে আজ সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএমসহ সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি দেয়া হবে। এরপরও যদি স্পেশাল ট্রেন স্থায়ীভাবে চালুর বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১২ জুন এ রুটে আবার স্পেশাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত এ ট্রেন চলাচল করার কথা রয়েছে। তবে আরও ২০ দিন এ স্পেশাল ট্রেন চলাচলের জন্য রেলওয়ে সদর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদার কথা চিন্তা করে স্পেশাল ট্রেনের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত তা মঞ্জুর হয়নি।

গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে বিশেষ ট্রেন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত ৮ এপ্রিল এই ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চালুর পর থেকে ট্রেনটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যাত্রীদের চাপে এরপর দুই দফায় বিশেষ ট্রেনের সময় বাড়িয়ে ১০ জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের ১১ দিন আগেই গত ৩১ মে ইঞ্জিন ও জনবল সংকট দেখিয়ে ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ১২ জুন এ রুটে আবার ট্রেনটি চলাচল শুরু করে। আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত এ ট্রেন চলাচল করার কথা রয়েছে। ট্রেনটি বন্ধের সিদ্ধান্তে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে।

ট্রেনটি স্থায়ী করার দাবিতে এরই মধ্যে স্থানীয় লোকজন রেলমন্ত্রী, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। স্থানীয়রা ট্রেনটি চালু রাখার আশ্বাস পেয়েছিলেন। হঠাৎ রহস্যজনকভাবে ট্রেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়। গত বছরের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করেন। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর একটি এবং চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আরেকটিসহ ঢাকা থেকে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করা হয়। এই দুটি ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাতায়াতের জন্য মাত্র ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে।