চট্টগ্রাম বন্দরে অপেক্ষমাণ জাহাজ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: দেশে আমদানি কমে গেছে। কমে গেছে জাহাজের আনাগোনাও। খোলা পণ্যবাহী জাহাজ না থাকায় গত তিন দিন বন্দরের পাঁচটি জেটির মধ্যে দুটি খালি। অপরদিকে কনটেইনার জাহাজের জেটির জন্য অপেক্ষমাণ জাহাজ নেই। ফলে বন্দরের জেটিতে সিঙ্গাপুর, কলম্বো, কিংবা মালয়েশিয়া থেকে আসা কনটেইনার জাহাজ সরাসরি বার্থিং নিচ্ছে। অথচ বার্থিং নেয়ার জন্য গড়ে ৩০ থেকে ৪০টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকত।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র জানিয়েছে, গতকাল চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জেটি ও বার্থে মোট খালাসযোগ্য জাহাজ ছিল ৬৪টি। এর মধ্যে কনটেইনার জাহাজ ছিল ১২টি, কার্গো জাহাজ ১৬টি, ক্লিংকারবাহী ১৮টি, তেলবাহী জাহাজ ১০টি এবং অন্যান্য জাহাজ ছিল আটটি। অর্থাৎ ৫১টি জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে। আর ১৩টি জাহাজ থেকে পণ্য নামানো বন্ধ ছিল। অপরদিকে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় একটিও পণ্যবাহী জাহাজ ছিল না। এ বন্দরে ১৩টি সাধারণ বার্থ, চিটাগং কনটেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) তিনটি জেটি, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে পাঁচটি জেটি, দুটি ডলফিন জেটি এবং ছয়টি রিভার মুরিং জেটি মিলে একই সঙ্গে ৩২-৩৩টি জাহাজ বার্থিং দেয়া যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১৭টি মূল জেটির মধ্যে ২ থেকে ১৩ নম্বর পর্যন্ত জেটির মধ্যে ১২ নম্বর জেটিতেও জাহাজ ভিড়ানো হয় না। সাধারণ কার্গো বার্থের ১১টিতে জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। এর মধ্যে সাতটি জেটিতে খোলা পণ্যবাহী জাহাজ এবং বাকি চারটিতে কনটেইনার জাহাজ বার্থিং দেয়া হয়। এছাড়া সিসিটির দুটি এবং এনসিটির চারটি মিলে ১০টি জেটিতে কনটেইনার জাহাজ ভিড়ানো হয়। আর এনসিটি ১ নম্বর জেটিতে শুধু পানগাঁও টার্মিনালের জাহাজ ভিড়ানো হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি এবং এনসিটির সব জেটিতে কী গ্যান্ট্রি ক্রেন রয়েছে। বাকি জেটিগুলোয় শোর হ্যান্ডলিং ক্রেন দিয়ে কার্গো এবং কনটেইনার হ্যান্ডলিং করা হয়।

অপরদিকে বন্দরের ১০টি জেটিতেই কনটেইনার জাহাজ হ্যান্ডলিং করে।

একটি শিল্পগ্রুপের এমডি শেয়ার বিজকে বলেন, আমাদের আগে প্রতি মাসে ৩০০ কোটি টাকার এলসি হতো। এখন ১২০ কোটি টাকার এলসি পেতে কষ্ট হচ্ছে। অনেক দেনদরবার করে এলসি নিতে হচ্ছে।

প্রথম প্রজšে§র একটি ব্যাংকের চট্টগ্রাম অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ ব্যাংকার মোহাম্মদ হাসান শেয়ার বিজকে বলেন, আমরা আগে চারটি-পাঁচটি এলসি দিতে পারতাম। এখন দুটি দিতে পারছি। কারণ হেড অফিস সব ধরনের এলসি দিচ্ছে না। আমি করোনার সময়েও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখিনি।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ও মুখপাত্র ওমর ফারুক শেয়ার বিজকে বলেন, এখন চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজের বার্থিং সময় শূন্য। অর্থাৎ একটি জাহাজকে আগের মতো অপেক্ষা করতে হয় না, যা আমাদের একটি অর্জন। এতে মাঝে মাঝে কিছু জেটি ফাঁকা থাকছে। এর মানে কিন্তু দেশে আমদানি কম হচ্ছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। আমদানি কমছে কি না, তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে গত অর্থবছরে চার হাজার ২৫৩টি জাহাজ কনটেইনার ও খোলা পণ্য নিয়ে এসেছিল। আগের অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল চার হাজার ২৩১টি। চলতি বছর এই সংখ্যা কমবে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০