নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সরকারিভাবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রথম চালান চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছে। এই চালানে ৭২৮ টন পেঁয়াজ রয়েছে, যা তুরস্ক থেকে ২৮টি রেফার (শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত) কনটেইনারের মাধ্যমে আমদানি করা হয়েছে। ভোগ্য পণ্যগুলো দ্রুত খালাস করে ট্রাক সেলের জন্য সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া হবে, এমনটি জানিয়েছে টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়।
টিসিবি সূত্রে জানা যায়, ‘এমভি কন্টশিপ হাব’ জাহাজে করে পেঁয়াজগুলো আমদানির পর চলতি মাসের ২ নভেম্বর বন্দরের এনসিটি জেটিতে নামিয়ে রাখা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব খালাস করে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেব আমরা। এর আগে সংকট শুরুর পর বেসরকারি পর্যায়ে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম চালান এসেছিল পেঁয়াজের। ওই দিনই ৫৪ মেট্রিক টন মিয়ানমারের পেঁয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করেছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র।
এ বিষয়ে টিসিবি আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এতদিন আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ নিয়ে ট্রাক সেল ও ডিলারদের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করে আসছি। এখন টিসিবির আমদানি করা চালান আসতে শুরু করেছে। পরের চালানে ২৯, ৩৮ ও ২০ কনটেইনার পেঁয়াজ আসছে। এখন থেকে টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা ও পেঁয়াজের পরিমাণ বাড়বে। বুধবার (৪ নভেম্বর) আমরা ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ দিচ্ছি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরে থাকবে ১২টি ট্রাক, বাকি আটটি আশপাশের জেলা ও উপজেলায় যাবে। সরবরাহ বেশি থাকলে আমরা প্রতি ট্রাকে এক টন পেঁয়াজ দিচ্ছি।’
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এসএম নাজের হোসেন বলেন, ‘আমরা নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবিকে শক্তিশালী করার দাবি জানিয়ে আসছি বছরের পর বছর। পাশাপাশি চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, ভোজ্যতেল ইত্যাদির উৎপাদন, মজুত, চাহিদা, ঘাটতি ইত্যাদির সঠিক পরিসংখ্যান আবশ্যক। এটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, আমাদের পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি সংরক্ষণে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য উন্নত বীজ, চাষিদের প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও চাষে উদ্বুদ্ধকরণে প্রণোদনা দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, বিভিন্ন দেশ থেকে দুই লাখ তিন হাজার ৭২১ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্র থেকে ৪৬৮টি আইপি ইস্যু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্দরে আসা ২৯ হাজার ৫৩০ টন পেঁয়াজের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪৭৬টি রিলিজ অর্ডারের মাধ্যমে।