চড়া বাজারে দাম বেড়েছে ডিমের কমেছে মুরগি-পেঁয়াজের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে পেঁয়াজ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। অপরদিকে দাম বেড়েছে ডিমের। তবে সার্বিকভাবে বাজারের উত্তাপ কমেনি। এক সপ্তাহের ব্যবধানেও নিত্যপণ্যের চড়া দাম বিরাজ করছে। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি, তেলের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। আকাশ ছোঁয়া দামে কেনাবেচা চলছে এসব পণ্যের। এর সঙ্গে এ সপ্তাহে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ডিম ও মাছের অতিরিক্ত দাম।

ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা কমলেও বাজার এখনও চড়া। এখনও স্বাভাবিক দরে ফেরেনি পেঁয়াজের দাম। সব মিলিয়ে জীবন বাঁচানোর প্রয়োজনে নিত্যপণ্যের বাজারে সাধারণ মানুষ যেন অসহায়। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম কমেছে পাঁচ টাকা পর্যন্ত। দেশি ও ভারতীয় দুই ধরনের পেঁয়াজই একই দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতাদের ৬০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। গত দুই-তিন আগে ৬৫ টাকা খরচ করতে হয়েছে। পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে একজন ব্যবসায়ী বলেন, পূজার সময় ভারত থেকে পেঁয়াজ কম আসায় দাম বেড়ে গিয়েছিল। তবে বাজারে পেঁয়াজের অভাব নেই। দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। এ কারণে এখন পেঁয়াজের দাম কমছে। অস্বাভাবিক কিছু না হলে সামনে দাম আরও কমবে।

আরও দেখা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও গতকাল তা কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া কেজিপ্রতি সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা ও দেশি মুরগি ৩৮০ থেকে ৩৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫৯০ থেকে ৬০০ টাকায়। এবার বাজারে উত্তাপ ছাড়িয়েছে ডিমের দাম। ডজনপ্রতি প্রায় পাঁচ থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত কয়েকদিনে এক ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা। আজ তা ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি বাজারে খুব বেশি দামের পার্থক্য দেখা যায়নি। কেজিপ্রতি আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, টেমেটো ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ১৬০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, সিম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি পিচ কপি ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ৩০ টাকা।

একজন সবজি বিক্রেতা জানিয়েছেন, সবজির বাজারে দাম খুব বেশি ওঠানামা করেনি। শুধু সিমের দাম আগের চেয়ে একটু বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম প্রায় একই রয়েছে। তবে প্রায় সব সবজির দামই ৫০ টাকার ওপরে রয়েছে। হঠাৎ ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে একজন ডিম ব্যবসায়ী বলেন, প্রতি বছর এ সময় ডিমের দাম বাড়ে। এবারও সেই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া মুরগির দাম বেশি হওয়ায় ডিমের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। এটাও দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের মতোই সব থেকে বেশি দামে বিক্রি করছেন গাজর ও টমেটো। মানভেদে এক কেজি গাজর ১০০ থেকে ১৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০

 থেকে ১৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজি দুটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এ দুই সবজির পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য সবজিও। শীতের আগাম সবজি শিম গত সপ্তাহের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা। ঝিঙের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। মুলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে চিচিঙ্গা, বরবটি, ঢেঁড়শ, পটোল, করলার দাম খুব একটা হেরফের হয়নি। করলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়শের কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, বরবটির কেজি পাওয়া যাচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ২০ টাকা, মুলা শাকের আঁটি ১০ থেকে ১০ টাকা, কলমি শাকের আঁটি পাঁচ থেকে ১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

অপরদিকে, সবচেয়ে নি¤œমানের মোটা চালের কেজি এখনও ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উন্নতমানের চিকন চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আটার কেজি ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬০ টাকা। খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৩ টাকা। পামওয়েল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। সরষের তেল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে। ময়দা ৪০ টাকা কেজি। চিনির কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০