চবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাকে পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদ। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পুলিশ-ছাত্রলীগ সংঘর্ষের ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন চবি ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুল ও সহ-সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কায়সার শাকিল।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ৪০১ নং কোর্সের পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরীক্ষা কেন্দ্রে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের বাধা প্রদান করেন একই বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ কায়সার শাকিল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর শাহরিয়ার শাহীনকে গত বছর ১০ অক্টোবর কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করে।
জানা যায়, এ সময় শাকিলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ অনুষদের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ এসে তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গালাগাল করতে থাকে। একই সঙ্গে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে এএসআই মহসিন আলমসহ পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এতে ফিন্যান্স বিভাগের রকিবুল হাসান রকি এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নাজমুল সাদাত নামের দুই ছাত্রলীগকর্মী আহত হন। তাদের তাৎক্ষণিক চবি মেডিক্যাল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করা হয়।
এছাড়া শাহনূর প্রীতম, নূরউদ্দীন, মিসবাহুল ইসলাম, রায়হান নামের আরও চার সাধারণ শিক্ষার্থীও পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হন। তারা সবাই নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়ানোয় কায়সার শাকিলকে আগেই দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনো বহিষ্কৃত ছাত্র পরীক্ষায় কোনোভাবেই অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই। সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় প্রক্টর দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এটা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে।