Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 8:52 pm

চরাঞ্চলের কৃষকরা ঝুঁকছেন‘জাপানি মিষ্টি আলু’ চাষে

 

প্রতিনিধি, বগুড়াঃ বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা ও বাঙালি নদীর চরাঞ্চলে ‘জাপানি জাতের মিষ্টি আলু’ চাষাবাদ হচ্ছে। দেশি মিষ্টি আলুর তুলনায় ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা এ আলু চাষে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দির নদীর জেগে ওঠা জমিতে কৃষকরা দীর্ঘদিন থেকে দেশি মিষ্টি আলুর চাষ করে আসছেন। স্থানীয় জাতের মিষ্টি আলুর সঙ্গে এ বছর চাষ হয়েছে জাপানি জাতের মিষ্টি আলু। দেশি মিষ্টি আলুর তুলনায় এর ফলন দ্বিগুণ। তাই কৃষকরা এখন এই জাতের মিষ্টি আলুর দিকে ঝুঁকছেন।

উপজেলার নারচি ইউনিয়নের চর গোদাগাড়ী গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে বিক্ষিপ্তভাবে ১০০ বিঘার অধিক বেশি জমিতে এ জাতের আলু চাষ হয়েছে। সেখানকার কৃষান-কৃষানিরা জাপানি মিষ্টি আলু জমি থেকে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

চর গোদাগাড়ী গ্রামে জমি থেকে আলু তোলায় ব্যস্ত কৃষক সামাদ আলী জানান, তার দুটি আলুর গাছে ছয় কেজি আলু হয়েছে। মাত্র ১৫ শতাংশ জমি থেকে তিনি ৪৫ মণ জাপানি মিষ্টি জাতের আলু পেয়েছেন।

কৃষক সামাদ বলেন, ‘জাপানি একটি কোম্পানির সঙ্গে আমরা চুক্তি সাপেক্ষে এ জাতের আলুর চাষ করছি। তারা আলুর চারা, সার, কীটনাশক সবকিছু দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমরা শুধু পরিচর্যা করেছি। এতে আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি।’

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গত বছর এ উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলুর চাষ হয়েছিল। এ বছরও লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে ৪২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে, উৎপাদিত হয়েছে হেক্টরপ্রতি ১৫ টন। আরও ৫০ হেক্টর জমিতে জাপানি জাতের মিষ্টি আলু চাষ হয়েছে। দেশি জাতের আলুর তুলনায় এ জাতের আলুর ফলন খুবই বেশি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘নারুতো জাপান কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি দুই বছর আগে চাষিদের মাঝে চারা, সার ও বীজ কারিগরি সহায়তা দিয়ে এ জাতের মিষ্টি আলুর চাষ শুরু করেছে। এ কোম্পানি কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মেট্রিক টন ১৫ হাজার টাকা দরে আলু ক্রয় করে। এরপর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেড কোম্পানির কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে জাপান, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে। মূলত দেশের উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধাসহ পাঁচটি জেলার বিভিন্ন উপজেলার নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে এ জাতের মিষ্টি আলুর চাষ শুরু হয়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, ‘নতুন জাত হিসেবে ও ফলন বেশি হওয়ায় জাপানি মিষ্টি আলুর প্রতি কৃষকরা ঝুঁকে পড়ছেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরগুলোয় এ জাতের আলুর চাষ বৃদ্ধি পাবে।

এই কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, নানা ধরনের ভিটামিন ও পুষ্টিগুণ থাকায় এই মিষ্টি আলু মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী।