চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারে ঔষধি গুণসমৃদ্ধ একটি ভেষজ উদ্ভিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। জানা গেছে, দাঁত ও মাড়ির যে কোনো ব্যথা নির্মূলে গাছটি দারুণ কার্যকর। স্থানীয়ভাবে গাছটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ঝুটমূল’। অবশ্য এখনও এর বৈজ্ঞানিক নাম পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক ড. সাইফুর রহমান জানান, বছর দেড়েক আগে হঠাৎ এক গভীর রাতে ডানদিকের ওপরের মাড়িতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করি। প্যারাসিটামল খেয়ে কিছুটা উপশম হলেও শেষ রাতে ব্যথা তীব্র হয়। সকালে রজব আলী নামে একজন কর্মচারী হর্টিকালচার সংলগ্ন নয়াগোলা এলাকায় কবিরাজের খোঁজ দিয়ে বলেন, এক ধরনের গাছের পাতা চিবুলে সেরে যায় দাঁতব্যথা। তাৎক্ষণিক পাতা এনে চিবুনোর ১০ মিনিটের মধ্যে ব্যথা সেরে যায় তার।
পরে তিনি ওই গাছের চারা সংগ্রহ করেন এবং ফার্মের ভেতর পরিচর্যা করেন। বর্তমানে ওই ফার্ম থেকে গাছটির চারা ব্যাপক হারে বিক্রি হচ্ছে। দাম ৫০ টাকা। গাছটি আড়াই থেকে তিন ফুট উঁচু হয়। তবে অনেক জায়গা নিয়ে ডালপালা বিস্তার করে। শাখায় শাখায় কাঁটাও রয়েছে। প্রথমে মনে হবে জংলি কোনো গাছ। গাছের পাতা বেশ লম্বা, যা জামপাতার মতো দেখতে। তবে গাঢ় সবুজ পাতা, ইচ্ছা করলেই ছেঁড়া যায় না। গাছের প্রতিটি ডগা, মূল থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত বেলগাছের মতো লম্বা লম্বা কাঁটা রয়েছে। সাবধানে লম্বা কাঁটা এড়িয়ে পাতা তুলতে হয়।
ড. সাইফুর রহমান বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এর উপকারিতার বিষয়টি সবার সামনে আনা হয়। তিনি জানান, বহু চেষ্টা করে গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম বের করতে না পারলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন এর গুণাগুণ। ড. সাইফুর রহমান দাঁত ও মাড়ির ব্যথা সারানোর ঝুটমূল গাছের সহস্রাধিক চারা রোপণ করেছেন। বর্তমানে শত শত চারা হর্টিকালচার সেন্টারে পাওয়া যাচ্ছে।
হর্টিকালচার সেন্টারের রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা নজিবুর রহমান জানান, ব্যথা উপশমে গাছটির কার্যকারিতা সত্যি অবাক করার মতো!
ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ