আকর্ষণীয় রং ও পুষ্টিগুণে ভরপুর ক্যাপসিকাম এক ধরনের মরিচবিশেষ। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এই ফল বা সবজির অপর নাম বেল পেপার, মিষ্টি মরিচ বা মরিচ। দেখতে সুন্দর। আমাদের দেশে বেল পেপার বা ক্যাপসিকাম লাল, হলুদ, কমলা ও সবুজ বর্ণের পাওয়া গেলেও বাইরের দেশে আরও কিছু রঙের দেখতে পাওয়া যায়। চীনে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বেল পেপার চাষ হয়। যুক্তরাষ্ট্রে এ ফলটিকে ‘বেল পেপার’, যুক্তরাজ্যে ‘পেপার’ এবং বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে ‘ক্যাপসিকাম’ নামে
ডাকা হয়।
ক্যাপসিকামে প্রায় ৯৪ শতাংশ পানি, পাঁচ শতাংশ কার্বোহাইড্রেট, খুব সামান্য পরিমাণ চর্বি ও প্রোটিন থাকে। ১০০ গ্রাম পরিমাণের ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে। প্রায় ৯৭ শতাংশ ভিটামিন ‘সি’ ও ১৭ শতাংশ ভিটামিন ‘বি৬’ থাকে। ভিটামিনের মধ্যে আরও রয়েছে ‘এ’, ‘ই’ ও ‘কে’।
১০০ গ্রামের একটি ক্যাপসিকামে রয়েছে এনার্জি ২০ কিলোক্যালরি, চার দশমিক ৬৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১৭০ মিলিগ্রাম চর্বি ও ৮৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন। খনিজ উপাদানের মধ্যে ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, দশমিক ৩৪ মিলিগ্রাম আয়রন, পটাশিয়াম ১৭৫ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম ও ফসফরাস ২০ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। এছাড়া সোডিয়াম, জিংক ও ম্যাংগানিজ সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায় ক্যাপসিকামে।
উপকারিতা
ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে। ক্যাপসিকামের ক্যাপসাইসিনস নামের উপাদান ডিএনএর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান সংযুক্ত হতে বাধা দেয়
বেল পেপার ব্যথা নিরাময়ে বেশ কাজে দেয়। মাইগ্রেন, সাইনাস, ইনফেকশন, দাঁত ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস প্রভৃতি ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
দেহের বাড়তি ক্যালরি পূরণে কাজ করে। ফলে উচ্চ চর্বি থেকে যে ওজন বৃদ্ধি পায়, তা হ্রাস করে সি সিকনেস, ম্যালেরিয়া, জ্বর প্রভৃতি রোধে বেল পেপার বা ক্যাপসিকাম বেশ কার্যকর
ক্যাপসিকামে থাকা অ্যালকালোয়েড অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি ও
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এর ক্যানিন আন্ত্রিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহƒত হয়
ক্যাপসিকামের ভিটামিন ‘সি’ মস্তিষ্কের টিস্যু পুনরুজ্জীবিত করে ও দেহের হাড় সুগঠিত করে। এটি বার্ধক্যজনিত অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে
ত্বকের যত্ন ক্যাপসিকামের অসাধারণ ভূমিকা রয়েছে। ত্বক পরিষ্কার রাখতে ও র্যাশ হওয়া কিংবা ব্রণ প্রতিরোধে এটি ভালো কাজ করে।
হাসানুজ্জামান পিয়াস