শীত শেষের মৌসুমি ফল বরই। চাহিদা থাকায় চাষিরা নানা জাতের বরইয়ের চাষ করে থাকেন। নারিকেলি কুল, আপেল কুল, বাউ কুল, থাই কুলের পাশাপাশি দেশি টক কুল তো রয়েছেই। কৃষি-বাণিজ্যে ফলটির বেশ গুরুত্ব রয়েছে।
কুল বরই হোক আর টক বরই এটি মানবদেহের রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফলটি জনপ্রিয়। পুষ্টিগুণে ঠাসা এ ফলের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ।
১০০ গ্রাম বরইয়ে ৭৯ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি রয়েছে। শর্করা রয়েছে ২০ দশমিক ২৩ গ্রাম। চর্বি রয়েছে শূন্য দশমিক দুই গ্রাম। আমিষ এক দশমিক দুই গ্রাম। জলীয় অংশ রয়েছে ৭৭ দশমিক ৮৬ গ্রাম। ভিটামিন এ ৪০ আইইউ। থায়ামিন শূন্য দশমিক শূন্য দুই মিলিগ্রাম। রিবোফ্লাভিন দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম। নিয়াসিন শূন্য দশমিক ৯ মিলিগ্রাম। ভিটামিন বি৬ দশমিক ০৮১ মিলিগ্রাম। ভিটামিন সি ৬৯ মিলিগ্রাম। ক্যালসিয়াম ২১ মিলিগ্রাম। আয়রন দশমিক ৪৮ মিলিগ্রাম। ম্যাগনেসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম। ম্যাংগানিজ দশমিক ০৮৪ মিলিগ্রাম। ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম ২৫০ মিলিগ্রাম। সোডিয়াম তিন মিলিগ্রাম। জিংক দশমিক ০৫ মিলিগ্রাম। আসুন জেনে নিই বরইয়ের রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা:
স বরইয়ের ভিটামিন ‘সি’ গলার ইনফেকশনজনিত বিভিন্ন অসুখ, যেমন টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিভে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া প্রভৃতি রোধ করে
# যকৃতের কাজের ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়
# এর রস অ্যান্টি ক্যানসার ড্রাগ হিসেবে
ব্যবহার করা হয়। এতে রয়েছে ক্যানসার ও টিউমার সেলের পাশাপাশি লিউকোমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ শক্তি
# উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যথেষ্ট উপকারী
# রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এর গুরুত্ব রয়েছে
# ক্রমাগত মোটা হয়ে যাওয়া ও রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া থেকে রক্ষা করে বরই
# খাবারে রুচি আনে
# স্ট্রেস হরমোন আমাদের মনে অবসাদ আনে, দুঃখ-কষ্টের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, নিদ্রাহীনতা তৈরি করে। স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে দেয় এ ফল। মাথাব্যথা কমাতে ভূমিকা রাখে টক বরই
# কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে ভীষণ কার্যকর ফল এটি। হজমশক্তি বাড়াতে বরই কার্যকর
# এটি ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বককে কোমল করে
# বয়সের ছাপ পড়তে বাধা দেয়
# চীনা চিকিৎসা অনুসারে, শুকনো লাল কুল বরই পাত্রে গরম করে চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে পেটব্যথা প্রশমিত হয়। এ পথ্য অ্যাজমা প্রশমনে সহায়তা করে।
কামরুন নাহার ঊষা