নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি হিসাবে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানিয়েছে।
কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডাক্তার আয়শা আক্তার বলেন, ঢাকা শহরের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ১২টি হাসপাতাল, বেসরকারি ২৯টি হাসপাতাল ও ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডেঙ্গু রোগীদের এ হিসাব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মিত নজরদারি করে শুধু এমন হাসপাতালগুলোর তথ্য এখানে আছে।
এ বছর জুনের শেষ থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ ঢাকা শহরে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। জুলাই ও আগস্টে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ প্রবলভাবে বাড়ে। ঈদুল আজহার কাছাকাছি সময়ে দেশের প্রায় সব জেলায় ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে।
তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮, ফেব্রুয়ারিতে ১৮, মার্চে ১৭, এপ্রিলে ৫৮, মে মাসে ১৯৩, জুনে এক হাজার ৮৮৪, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ এবং সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ৮৫৬, অক্টোবরে আট হাজার ১৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর নভেম্বরের ২৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত তিন হাজার ৯২৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ। এর মধ্যে আগস্টে ছিল সর্বোচ্চ। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এ রোগকে মহামারি ঘোষণা করা হয়নি।
এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ২১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৯৯ হাজার ৩০৬ জন।
এদিকে, এ পর্যন্ত ২০৩টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যুর প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ডেঙ্গুতে ১২৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কন্ট্রোল রুম জানায়, গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৩ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৭ জন ঢাকায় ভর্তি নিয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৫১ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে রাজধানীর রোগী ২৫১ জন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এবং পরে তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে।