শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) আবারও সুদের হার বাড়াতে যাচ্ছে। চলতি সপ্তাহে নীতিনির্ধারণী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এ দেশটিতে গত নভেম্বরে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। মূল্যস্ফীতি দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া মার্কিন সিনেটে সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া কর কর্তন বিল কংগ্রেসেও পাস হলে দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাবই ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। সব মিলিয়ে ফেড মনে করছে এখন সুদের হার বাড়ানো যুক্তিযুক্ত। এ নিয়ে চলতি বছর তিনবার সুদের হার বাড়াবে ফেড। খবর এএফপি।
গত ৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর দুই দিনব্যাপী বৈঠকে ফেড সুদের হার অপরিবর্তিত রাখে। অর্থনীতি শক্ত প্রবৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত বলে বৈঠকে একমত হন নীতিনির্ধারকরা। এছাড়া কর্মকর্তারা মনে করেন, দেশটির কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ কর কর্তন বিল পাস করবে, যা ব্যবসার বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
ফেড সূত্র জানায়, নীতিনির্ধারকরা নিকট মেয়াদে ভোক্তা ব্যয়ে জোরালো প্রবৃদ্ধি আশা করছেন, যা শ্রমবাজারের চলমান দৃঢ় অবস্থার সমর্থন পাবে। অনেকে নিকট মেয়াদে ফেডারেল ফান্ড রেটের টার্গেট রেঞ্জ আবার বাড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মতামত দিয়েছেন।
ফেডের বিদায়ী প্রধান জ্যানেট ইয়েলেন স্বীকার করেন, নীতিনির্ধারকরা মূল্যস্ফীতির দুর্বলতা পুরোপুরি ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তবে বেশিরভাগেরই আশা, এটি মধ্য মেয়াদে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। ফলে তার আগেই ফেডের উচিত সুদহার বৃদ্ধি করা। ফেডের বেশিরভাগ সদস্য জানান, ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে।
২০১৫ সালের শেষদিক থেকে এ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংক চারবার সুদহার বাড়িয়েছে। এদিকে চলতি বছর আরও একবার এবং ২০১৮ সালে আরও তিনবার সুদহার বাড়ানোর পূর্বাভাস দিয়েছে ফেড।
ফেডের ওপেন মার্কেট কমিটি যুক্তরাষ্ট্রের সুদের হার নির্ধারণ করে। কমিটির অল্প কয়েকজন সদস্য অবশ্য এ বছরের কিছু নীতিমালা বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বৈঠকেও কেন কয়েক বছর ধরে ফেডের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যের থেকে মূল্যস্ফীতি নিচে থাকছে। তবে শ্রমবাজারের ভালো অবস্থান মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ীই হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চলতি বছরে নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই লাখ ২৮ হাজার কর্মসংস্থান বেড়েছে। বিশ্লেষকদের প্রত্যাশার তুলনায় এ বৃদ্ধির হার বেশি। এতে দেশটিতে বেকারত্বের হার কমে চার দশমিক এক শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত ১৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। গত ছয় মাসে মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তিন শতাংশ হারে বাড়ছিল, যা ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে বেশি।
ইতোমধ্যে ২০০০ সালের পর ভোক্তা আস্থা চূড়ায় পৌঁছেছে এবং ৮৬ সপ্তাহ একটানা কর্মী নিয়োগ দিয়েছে মার্কিন কোম্পানিগুলো।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, অভিজ্ঞ লোকের সংখ্যা কম থাকায় মার্কিন কোম্পানিগুলো অনভিজ্ঞ কর্মীদের বেশি নিয়োগ দিচ্ছে। এ লোকবল নিয়োগ ও বেকারত্বের হার কম হওয়ায় কর্মীদের বেতন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর সব কর্মসংস্থানে অন্তত দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ বেতন বেড়েছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁ ব্যবসায় কর্মীদের ঘণ্টাপ্রতি বেতন অন্তত তিন দশমিক আট শতাংশ বেড়েছে।