Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 9:11 pm

চলনবিলে হাঁসের ভ্রাম্যমাণ খামারে স্বাবলম্বী শতাধিক পরিবার

চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ভ্রাম্যমাণ খামার করে হাঁস পালন করছে শতাধিক পরিবার। এতে পরিবারগুলো সচ্ছলতার মুখ দেখেছে। বছরের পুরোটা সময় এসব পরিবার হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। হাঁসের ডিম ও ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তা বিক্রি করে এসব পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে।
এক সময় এ এলাকার অনেক পরিবারে ছিল অভাব-অনটন। সেদিন এখন অতীত। বর্তমানে ডিম বিক্রি করে সন্তানদের পড়ালেখার খরচও মেটাতে পারছে তারা। সিংড়া ছাড়া চলনবিলের তাড়াশ, চাটমোহর, গুরুদাসপুর উপজেলার অনেকেই এখন ভ্রাম্যমাণ হাঁস পালন করছেন।
সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অনেক পরিবার নিজ উদ্যোগে ভ্রাম্যমাণ খামারে হাঁস পালন করে আসছে। উপজেলার ডাহিয়া, আয়েশ, বিয়াশ, কালিনগর, সাতপুকুরিয়া, হিজলী, কান্তনগর গ্রামের অনেক পরিবার ভ্রাম্যমাণ হাঁস পালন করে সংসার চালাচ্ছে।
বর্ষা মৌসুম শুরু হলে বিলের অভ্যন্তরের গ্রামগুলোর পতিত সরকারি জলা বা জমিতে ভ্রাম্যমাণ খামার করে হাঁস পালন শুরু করে তারা। কোনো সরকারি সহায়তা ছাড়াই তারা হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও অনেক পরিবার হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে জানায় পরিবারগুলো। উপজেলার বলিয়াবাড়ি গ্রামের আবদুল মালেক বলেন, চার বছর আগে স্থানীয় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে ভ্রাম্যমাণ হাঁস পালন শুরু করি। ঋণের আবেদন করেছি। কিন্তু সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পাইনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি বাড়ি একটি খামারের উপকারভোগীরা সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলেও তারা টাকা কাজে লাগান না। ওই প্রকল্পের আওতায় চলনবিল এলাকার অনেকে হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠবে। তিনি হাঁস পালন করে সংসারের সব খরচ নির্বাহ করেন। গত বছর কলেরায় ১০০টির মতো হাঁস মরে যাওয়ায় তিনি লোকসানে পড়েন। তবে ডিম বিক্রি করে লোকসান পুষিয়ে নেন তখন। নাছিয়ারকান্দি গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, ছয় বছর ধরে হাঁস পালন করি। এতেই সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। কালিনগর গ্রামের আলেফ আলী জানান, প্রায় ১৫ বছর ধরে হাঁস পালন করছি। বিল এলাকায় হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। তার বর্তমানে ৫০০ হাঁস রয়েছে। প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি ডিম বিক্রি করেন। হাঁসের খাওয়া মেটানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী খামার স্থাপন করেছেন। এতে খরচ তুলনামূলক কম লেগেছে। তবে পরিশ্রম বেশি। আবার লাভও বেশি হচ্ছে। সরকারি সহায়তা পেলে বিল এলাকায় অনেকেই হাঁসের ভ্রাম্যমাণ খামার করতেন।

তাপস কুমার