চলার পথে শত্রু-মিত্র চিনতে হবে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতিবিদদের একটি অংশের সহযোগিতা না পেলে ২০০৭ সালের সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকার বেশিদিন টিকতে পারত না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নেত্রীর কারাবন্দি দিবসে একত্র হয়েছেন, সেদিন যদি এ দেশের রাজনীতিকদের একটা অংশ ওই জরুরি সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করত, তাহলে বাংলাদেশের ওয়ান-ইলেভেন টিকতে পারত না। এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কঠিন হতো।

তিনি বলেন, অনেক রাজনীতিক সেদিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাজনীতিকে মাইনাস ফর্মুলায় নিয়ে গেছে। আজকে আমি বলব, আমাদের শত্রুমিত্র চিনতে হবে। চলার পথে শত্রুমিত্র চিনতে হবে। একবার যে বিশ্বাসঘাতক, বারে বারে সে বিশ্বাসঘাতক।

২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর সেনা-নিয়ন্ত্রিত সরকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে প্রায় ১১ মাস বন্দি রেখেছিল। সে বছরের ১৬ জুলাই ভোরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। সকাল সাড়ে ৭টায় যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসে। প্রায় ১১ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনাকে মুক্তি দেয়া হয়।

এ প্রসঙ্গ তুলে ধরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, আজকের এই দিন শুধু শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস নয়, এই দিন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বন্দি দিবস। এই দিন শেখ হাসিনাকে বন্দি করে আমাদের বিকাশমান গণতন্ত্রকে বন্দি করা হয়েছে। রাজনীতির অনেকেই জেলে গেছে, আমাদের নেত্রী বন্দি হয়েছেন, ক্ষমতায় ছিল বিএনপি। কিন্তু প্রথম বন্দি হন শেখ হাসিনা। তারা এসে বিরোধী দলকেই প্রথম বন্দি করে। বিরোধী দলের নেতা প্রথম বন্দি হন, সরকারি দলের নেতা তখনও বন্দি হননি।

সেদিন বন্দি হওয়ার আগে জনগণ ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। চিঠিটিতে উজ্জীবিত হন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। গণতন্ত্র অবরুদ্ধ হওয়ায় দুঃসময়ে নেতাকর্মীরা কী করবেন, তার নির্দেশনা ছিল ওই চিঠিতে।

চিঠিটি ছিল নিন্মরূপ

‘প্রিয় দেশবাসী, আমার সালাম নেবেন। আমাকে সরকার গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছে কোথায় জানি না। আমি আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। জীবনে কোনো অন্যায় করিনি। তারপরও মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। ওপরে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও আপনারা দেশবাসী আপনাদের ওপর আমার ভরসা। আমার প্রিয় দেশবাসী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে আবেদনÑকখনও মনোবল হারাবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। যে যেভাবে আছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না। সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সাথে, আমৃত্যু থাকব। আমার ভাগ্যে যা-ই ঘটুক না কেন আপনারা বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান। জয় জনগণের হবেই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবোই। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০