চাঁদপুরে দুই শতাধিক পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

বেলায়েত সুমন, চাঁদপুর: পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাঁদপুরে দুই শতাধিক হাটে পশু বেচাকেনা শুরু হয়েছে। হাটগুলোয় পশু বেচাকেনা চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। চাঁদপুর কভিড-১৯-এর উচ্চ ঝুঁকিতে থাকলেও পশুরহাটে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ উৎসুক জনতার উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। পশুরহাটে আগত কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব।

কভিড-১৯-এর কারণে সারাদেশে কোরবানির হাট ভার্চুয়ালি হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের অন্যান্য জেলার মতো চাঁদপুরেও পশুরহাট বসার ইজারা দেয়া হয়েছে। কিন্তু মানুষের অসচেতনতায় কভিডের সংক্রমণ বাড়বে, এমনই মনে করছেন সচেতন মহল।

চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার চাহিদার তুলনায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংকট রয়েছে। চলতি বছর এখানে কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৩৬১টি। কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ২৬৮টি। ফলে চাহিদার তুলনার সংকট রয়েছে এক হাজার ৯৩টি পশুর। কোরবানির জন্য চাহিদার চেয়ে গরু কম রয়েছে পাঁচ হাজার ৯১টি। তবে বাড়তি রয়েছে ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু।

উপজেলাভিত্তিক হিসেবে কোরবানির জন্য সদর উপজেলায় ১১ হাজার ৬০২, মতলব দক্ষিণে ১৪ হাজার ৫০০, মতলব উত্তরে ১১ হাজার ৪৫০, কচুয়ায় ১৪ হাজার ৩৬৫, শাহিরাস্তিতে ২৫ হাজার ১১৯, হাজীগঞ্জে ১৭ হাজার ৯০০, ফরিদগঞ্জে ১৯ হাজার ও হাইমচরে চার হাজার ৪৫০টি গবাদি পশুর প্রয়োজন থাকলেও জেলার তালিকাভুক্ত  তিন হাজার ২৪০ জন খামারির খামারে কোরবানিযোগ্য গরু রয়েছে ২৬ হাজার ৭৯০টি। আর ছাগল ও ভেড়াসহ অন্যান্য পশু রয়েছে ১৩ হাজার ৬৫৪টি। তালিকাভুক্ত খামারি নয় এমন খামারে ৫১ হাজার ৮৯টি গরু ও ২৫ হাজার ৭৩৫টি ছাগল, ভেড়া ও অন্যান্য পশু রয়েছে। সব মিলিয়ে পশু রয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার ২৬৮টি।

কভিড-১৯-এর মধ্যে গত বছর জেলার ২২৫টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হলেও এবার জেলায় স্থায়ীভাবে ১৯৯টি ও অস্থায়ী ২৬টি পশুরহাট বসছে। হাটগুলোয় পশু বেচাকেনা চলবে ২১ জুলাই পর্যন্ত। চাঁদপুরে আট উপজেলার মধ্যে সদরে ১৪, কচুয়ায় ৪৪, ফরিদগঞ্জে ৩৪, মতলব উত্তরে ১৫, মতলব দক্ষিণে ১৭, শাহরাস্তিতে ২১, হাইমচরে ১০, হাজীগঞ্জে ২১, চাঁদপুর পৌরসভায় ছয়, ফরিদগঞ্জ পৌরসভায় দুই, মতলব পৌরসভায় চার, শাহরাস্তি পৌরসভায় তিনটি হাটসহ মোট ১৯১টি কোরবানির পশুরহাট বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চাঁদপুরের স্বর্ণখোলা পশুরহাট, ওয়ারলেস, বাবুরহাট, হাজীগঞ্জের বাকিলা পশুরহাট, রামপুর বাজার, কচুয়ার রহিমানগর বাজার পশুরহাট, শাহরাস্তির খিলা বাজার, ঠাকুরবাজার, মতলব উত্তরের চেঙারচর বাজার, ফরিদগঞ্জের চৌরঙ্গী পশুরহাটসহ জেলার ছোট বড় সব হাটে কোরবানির পশু বিক্রির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ব্যবসায়ী ও খামারিরা পশু নিয়ে বিভিন্ন হাটে পশু নিয়ে অবস্থান করছেন। পশু বেচাকেনা চলছে।

হাটগুলোয় মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। কেউ তোয়াক্কা করছেন না স্বাস্থ্যবিধি।

এদিকে হাটে পশুর দাম অনেক চড়া বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন হাটে অবস্থানরত ব্যবসায়ীসহ খামারি ও ক্রেতা বিক্রেতারা।

ওদিকে হাজীগঞ্জ উপজেলার চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে গরুর হাট বসিয়েছেন স্থানীয় বাকিলা পশুরহাটের ইজারাদার। এতে করে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট।

চাঁদপুর ডিসি ও ম্যাজিস্ট্রেট অঞ্জনা খান মজলিশ শেয়ার বিজকে বলেন, কোরবানির পশুরহাট ভার্চুয়ালি হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে হাট বসানোর অনুমতি দেয়া হয়েছে। পশুরহাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও চলছে কোরবানির পশু বেচাকেনা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০