বেলায়েত সুমন, চাঁদপুর: চাঁদপুরের আট উপজেলার যেখানে-সেখানে বিক্রি হচ্ছে এলপি (সিলিন্ডার) গ্যাস। মুদি দোকান থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন রিচার্জের দোকানসহ ফোন-ফ্যাক্সের দোকানেও এসব সিলিন্ডার গ্যাস অবাধে বিক্রি হচ্ছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে এলপি গ্যাস বিক্রির নানা প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, চাঁদপুর শহরের নতুন বাজার, পুরানবাজার, হাজীগঞ্জ বাজার ও হাজীগঞ্জ উপজেলার সুহিলপুর বাজার, ধড্ডা খালপাড়, পিরোজপুর বাজার, বলাখাল বাজার, বাকিলা বাজার, রামপুর বাজার, আলীগঞ্জ ঘিরে জমজমাট এ ব্যবসা। পাশাপাশি ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার অনেক দোকানে কোনো নিরাপত্তা ছাড়াই এসব গ্যাসের সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে।
অধিকাংশ দোকানির এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমোদন নেই। তারপরও অনেকে পুরোনো সিলিন্ডারে এলপি গ্যাস বিক্রি করছে। বিক্রি ও মজুতের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ অধিদপ্তরসহ জেলা প্রশাসনের অনুমতি নেয়ার কথা থাকলেও শুধু পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দোকানে সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। অথচ স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে কোনো ট্রেড লাইসেন্স না নিয়ে এ গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় জেলার অধিকাংশ দোকানে নানা আকারের সিলিন্ডারের দামের তালিকাও নেই। মৌসুমি দোকানিদের এলপি গ্যাস ব্যবহারের নিয়মকানুনও জানা নেই। নি¤œমানের রেগুলেটর, গ্যাস সরবরাহ পাইপ ও অনুমোদনহীন বিভিন্ন কোম্পানির ঝুঁকিপূর্ণ চুলা বিক্রিও হচ্ছে।
বাসাবাড়ি ও রেস্টুরেন্টে এলপি গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। দাম রাখা হচ্ছে ইচ্ছেমতো। সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। এলপি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের নিয়মকানুন না জানায় দুর্ঘটনাও ঘটছে।
বিভিন্ন স্থানের এলপি গ্যাস বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। কিন্তু অনুমোদন বা লাইসেন্সের বিষয়ে তারা ওয়াকিবহাল নন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসাররা জানান, যারা এসব এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে তাদের ২০০৩ সালের অগ্নিনির্বাপক আইন অনুযায়ী যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখবে সে শর্ত অনুযাযী তাদের লাইসেন্স দেয়া হয়। যদি কোনো ব্যবসায়ী লাইসেন্সবিহীন কিংবা অগ্নিনির্বাপণের কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রেখে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকে তাহলে সেটিও আমরা খতিয়ে দেখব। এছাড়া যারা লাইসেন্স নিয়ে সিলিন্ডার ব্যবসা করেন তাদের আমরা মাঝে মধ্যে সচেতন করি। বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণও দেয়া হয়।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, বিধিবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন স্থানে দোকানে দোকানে এলপি গ্যাসের ব্যবসা করছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।