নিজস্ব প্রতিবেদক : পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের চাঁদাবাজির অভিযোগের প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘চাঁদাবাজি অনেকের কাজ, এই চাঁদাবাজি একেবারে হয়তো বন্ধ করা সম্ভব নয়। এটি নিয়ন্ত্রণ করে সহনশীল পর্যায়ে রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি পৃথিবীর কোথায় হচ্ছে না? আমেরিকাতে হচ্ছে না? চাঁদাবাজি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে, আজ প্রধানমন্ত্রীকেও এ নিয়ে বলতে হচ্ছে। চাঁদাবাজির প্রভাব দ্রব্যমূল্যে পড়ে।’
ঈদুল ফিতরে যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে করণীয় নির্ধারণে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
বাসের বেহাল অবস্থা নিয়ে পরিবহন নেতাদের তিনি বলেন, ‘আপনারা বলছেন ঈদে লক্কড়ঝক্কড় মার্কা বাস
এই শহরে আসে। আমি তো দেখি এমন বাস শহরেই আছে। ঈদের আগে এসব বাসে রং লাগায়, যা ১০ দিনও থাকে না। বাসগুলো দেখলে লজ্জা পাই।’
তিনি বলেন, ‘ফেনী থেকে হানিফ উড়ালসড়ক আসতে যত সময় লাগে তার চেয়েও বেশি সময় লাগে উড়ালসড়ক থেকে নামতে।’
হাইওয়ে পুলিশকে ‘ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সরদার’ অভিহিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিএ ও হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা না বাড়ালে যতই আলোচনা করা হোক, সিদ্ধান্ত নেয়া হোক, কিছুই কাজ হবে না। পৃথিবী অনেক বদলেছে।’
সভায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রত্যেক ঈদের আগে প্রস্তুতি সভা করি। কিন্তু সভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়, সেগুলোর বাস্তবায়ন কতটা হয়েছে, তা ঈদের পরে আর মূল্যায়ন করি না। তাই সভায় যেসব সিদ্ধান্ত নিলাম, সেগুলো কতটুকু কার্যকর হলো, এর মূল্যায়ন করা উচিত।’
মন্ত্রী বলেন, ‘মহাসড়কে তিন চাকার যান, মোটরসাইকেল ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোÑসব মিলিয়ে দুর্ঘটনা হয়। আমি অনেকবার বলেছি, মূল বিষয়ে হাত দেয়া দরকার, কিন্তু হয়নি।’
পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে বিশ্বব্যাংকের কোনো প্রকল্প সরকার নেয়নি বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি রোড সেফটির প্রকল্প নিয়েছি, যা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। মন্ত্রণালয়কে বারবার বলেছি। সড়কে সবচেয়ে বড় উপদ্রব তিন চাকার গাড়ি ও মোটরসাইকেল। এজন্য নীতিমালা করা দরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমি সড়কে গেলেই দেখি সড়কে তিন চাকার গাড়ি নেই। আবার আমি না গেলে অহরহ চলে। বিআরটিএর সক্ষমতা যদি বাড়াতে না পারি, তাহলে আলোচনা করে যত ভালো সিদ্ধান্ত নিই না কেন, কার্যকর হবে না। এটাই বাস্তবতা।’