ফারুক আহমেদ চৌধুরী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার রেকর্ড পরিমাণ আম উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। এবার দুই লাখ ৪৪ হাজার টন আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে প্রায় ৯০ ভাগ গাছে ব্যাপক মুকুল আসায় লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ ফলন হতে পারে বলে আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
কৃষিবিজ্ঞানীরা জানান, সাধারণত প্রতি হেক্টরে ১০-১২ টন আম হয়ে থাকে। এবার তা বেড়ে ১৬ মেট্রিক টনের কাছাকাছি পৌঁছাবে। এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ অঞ্চলে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। গত বছর উৎপাদিত হয়েছিল দুই লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন। এবার তা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তারা।
জেলার বরেন্দ্র ও দিয়াড় অঞ্চলে আম চাষের পরিমাণ বেড়ে গেছে। গত বছরের চেয়ে এবার আট হাজার ৫৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। তবে সরকারিভাবে বলা হয়েছে, গত বছরের চেয়ে এবার চাঁপাই অঞ্চলে সাড়ে তিন হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। জেলার ক্ষীরশাপাত আমকে জিআই (ভৌগোলিক) পণ্য ঘোষণা করায় অনেকেই নতুন করে আম চাষে এগিয়ে আসছেন।
শিবগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে উপজেলার ১০ আমচাষির চুক্তি হয়েছে। রফতাানিকারক এনআর ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলার আমচাষি ইসমাইল খান শামীম, মমিন ইসলাম ও মো. আবদুল মালেক, রোহান এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে আমচাষি রবিউল ইসলাম, হক এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে মো. শাহবুদ্দিন, ত্বা-সীন এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে মো. নুরুল ইসলাম, দীপ এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে তোসিকুল ইসলাম ও নায়েব খান, লী এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে ওমর আলী ও ফ্রেস ভেজিটেবল ডটকমের সঙ্গে আবু জাওয়াদ খানের চুক্তি হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ উদ্যানতত্ত্ব গবেষণাগারের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফ্রুটব্যাগিং পদ্ধতির উদ্ভাবক ড. শরফ উদ্দিন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং শীতের কারণে এবার মুকুল আসতে দেরি করলেও দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। এবারের মুকুল থেকে যে আম আসবে তা থেকে কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে দারুণ উপকৃত হবে। আমচাষিরা খুবই সতর্কভাবে পরামর্শ নিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কাছে। বাগানের মুকুল পরিচর্যায় ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক প্রয়োগে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে। তাছাড়া কৃষির একাধিক বিভাগ পরামর্শ দিয়েছে আমচাষিদের অধিকহারে কীটনাশক প্রয়োগ না করার। তবে এবার কৃষি বিভাগের নির্দেশনা মোতাবেক রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনে বেশি আগ্রহী আমচাষিরা।
