চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে ব্যাংকাররা, গভর্নরকে চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাকালীন ছাঁটাই ও পদত্যাগে বাধ্য হওয়া কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ব্যাংকাররা। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধন শেষে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদারকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেন চাকরিচ্যুতরা।

করোনাকালীন বিনা কারণে কর্মী ছাঁটাই করেছে অনেক ব্যাংক। কেউ কেউ অভিনব কায়দায় অমানবিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে। গত সেপ্টেম্বরে এসব চাকরিচ্যুত ব্যাংকারকে চাকরি ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু নয় মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি অনেক ব্যাংক। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা সত্ত্বেও পুনর্বহাল না করায় আবারও রাস্তায় নামলেন ব্যাংকাররা।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে ছাঁটাই ও পদত্যাগে বাধ্য হওয়া ব্যাংকাররা জানান, করোনার সময় অন্যায় ও অমানবিকভাবে বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক কয়েক হাজার কর্মীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য ও ছাঁটাই করে।

বেআইনিভাবে পদত্যাগে বাধ্য ও ছাঁটাই করা কর্মকর্তাদের বহালের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্তপূর্বক প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে সার্কুলার (বিআরপিডি সার্কুলার নং-২১ তারিখ ১৬-০৯-২০২১) জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আবেদন করার পরও অনেক ব্যাংক তাদের কর্মীদের বহাল করছে না। অন্যায় চাকরিচ্যুতিতে ব্যাংকগুলোর উন্নয়নে অবদান রাখা কয়েক হাজার অভিজ্ঞ ব্যাংক কর্মকর্তা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাগাদা দেয়ার পরও বেশিরভাগ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা সার্কুলার অনুযায়ী কর্মীদের বহালে বিভিন্নভাবে কালক্ষেপণ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো সমাধান আসেনি।

মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া মাহবুব আলম বলেন, এইচআর থেকে ডেকে নিয়ে কোনো কারণ ছাড়াই পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। কারণ জিজ্ঞেস করলে এইচআর বলে, আপনার কোনো সমস্যা নেই। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ আপনাকে চাইছে না। আপনি অন্য কোথাও চাকরি দেখেন। এরপরও পদত্যাগ না করায় আমাকে ডেকে নিয়ে বলা হলো, পদত্যাগ না করলে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে না। এমন হুমকি দিয়েই পদত্যাগে বাধ্য করা হয়।

তিনি বলেন, ব্যাংক খাত অর্থনীতির ব্লাড। এখাতে যদি এমন অস্থির অবস্থায় হয়, চাকরির নিশ্চয়তা না থাকে তাহলে মেধাবীরা ব্যাংকের চাকরি করবে না। আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। আমরা আজকে নতুন গভর্নরকে চিঠি দিয়েছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো যেন আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করে; এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। 

যমুনা ব্যাংক থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া এনামুল হাসান বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমাদের চাকরি পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়ার পর নিয়ম মেনে আমি পুনর্বহালের আবেদন করেছি। একবার যোগাযোগ করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়নি।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৬ সেপ্টেম্বর পদত্যাগে বাধ্য হওয়া কর্মীদের চাকরিতে পুনর্বহালের জন্য নির্দেশনা দিয়ে সার্কুলার জারি করে। ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি ব্যাংকগুলো। পরে গত ১৫ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সামনে মানববন্ধন করেছিল চাকরি হারানো ব্যাংকাররা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০