Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:15 am

চাকরি হারালেন যশোরের আকিজ জুট মিলের ৬৩০০ শ্রমিক

প্রতিনিধি, যশোর : চাকরি হারিয়েছেন যশোরের অভয়নগরের আকিজ জুট মিলের ৬ হাজার ৩০০ শ্রমিক। বিদেশী অর্ডার না থাকাসহ দেশের বাজারে পাটের দাম বৃদ্ধির কারণে কারখানা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না জানিয়ে কর্মীদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মিলের কর্মীদের আনা-নেয়ার জন্য বাস সার্ভিসও (২৩টি বাস) মঙ্গলবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আকিজ জুটমিলের নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হাকিম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় অবস্থিত আকিজ জুট মিলস দেশে বেসরকারি খাতে পরিচালিত বৃহৎ জুট মিল। এ জুট মিলে তিন শিফটে যশোর, খুলনা ও নড়াইল জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাত হাজার শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। প্রতিদিন তাদের ২৩টি বাসে কারখানায় আনা-নেয়া করা হয়। মঙ্গলবার থেকে আকস্মিকভাবে বাস সার্ভিস বন্ধ করে দেয় মিল কর্তৃপক্ষ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কর্তৃপক্ষ স্থায়ী ৭০০ শ্রমিক বাদে বাকি ছয় হাজার ৩শ’ শ্রমিকের সবাইকে কাজে আসতে নিষেধ করেছেন। এ বিষয়ে মিলের সিবিএ সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে গুণগত পাট পাওয়া যাচ্ছে না এবং দামও অনেক বেশি। যে কারণে উৎপাদন সীমিত করেছে কর্তৃপক্ষ। মিলে প্রায় ৬ হাজার ৩০০ বদলি শ্রমিক রয়েছে। মূলত তাদেরই কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। বাকি ৭০০ স্থায়ী কর্মী দিয়ে মিলের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তা ছাড়া বৈদেশিক অর্ডারও কমে গেছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মিলের নির্বাহী পরিচালক শেখ আব্দুল হাকিম বলেন, ‘আমাদের পণ্য মূলত তুরস্কে যায়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উৎপাদিত পণ্য পাঠানো যাচ্ছে না। পাঠাতে গেলে খরচও বেশি হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন অর্ডারও কমে গেছে। এর পাশাপাশি দেশের বাজারে গুণগত মানের পাট পাওয়া যাচ্ছে না। যে পাট পাওয়া যাচ্ছে, তার দাম অনেক বেশি। সব মিলিয়ে তিন শিফটে উৎপাদন সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। লোকসান এড়াতে স্থায়ী শ্রমিকদের দিয়ে এখন দুটি শিফটে কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, বদলি শ্রমিকদের কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। এ কারণে বাস সার্ভিসও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মিলের শ্রমিকদের প্রতি বৃহস্পতিবার পাওনা পরিশোধ করে দেয়া হয়। বদলি শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ তাদের মজুরি না পান; তাহলে মিলে যোগাযোগ করলে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মিলের কার্যক্রমও পূর্ণ-উদ্যমে শুরু করা হবে। তখন বদলি শ্রমিকরা আবারও কাজে যোগ দিতে পারবেন জানান এই কর্মকর্তা।