চায়ের উৎপাদন আরও বাড়ানোর চিন্তা করছি: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: চায়ের উৎপাদন আরও বাড়ানোর চিন্তা করছেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্পর্শ পেয়েছে এই চা শিল্প। তার অবদানের কারণে এ শিল্প অনেক এগিয়েছে। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে, সাফল্য এসেছে। প্রতি বছর চার থেকে পাঁচ শতাংশ চা উৎপাদন বাড়ছে। তবে মানুষের চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম, সেজন্য রপ্তানি করতে পারছি না। গ্রামের মানুষরা এখন সকালে উঠেই দোকানে চা খান। এতে বোঝা যায়, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে।

গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ‘চা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ড যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এম শাহ আলম এবং টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান ওমর হান্নান বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে চা শিল্পে অবদানের জন্য জেমকন গ্রæপের মালিকানাধীন কাজী অ্যান্ড টি-সহ কয়েকটি কোম্পানির প্রতিনিধির হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী। কাজী অ্যান্ড কাজী টি কোম্পানির পক্ষে কাজী এনাম আহমেদ সম্মাননা স্মারকটি বাণিজ্যমন্ত্রীর হাত থেকে গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে টিপু মুনশি বলেন, ক্ষুদ্র চা বাগানগুলোকে সাপোর্ট দিতে হবে। সার্বিকভাবে আমাদের সবাইকে নিয়ে এগুতে হবে। এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি শ্রমিক আছে এ শিল্পে, তাদের সন্তানদের ট্রেনিং করিয়ে দেশের বাইরে পাঠানোর বিষয়টি দেখতে হবে। আমাদের কিছু চা পাতা রয়েছে, যেগুলো ইংল্যান্ডের বাজারে পাওয়া যায়। মানুষের আয় বাড়ছে, এতে আগে যিনি এক কাপ চা খেতেন, এখন তিনি দুই কাপ চা খাবেন। এখন দেশে দিনে ১০ কোটি কাপ চা খাওয়া হয়।

চা মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, চা বাগানে ভালো মানের রিসোর্ট তৈরি হচ্ছে। এগুলো ব্যবসার জন্য ভালো। ক্রেতাকে রিসোর্টে রেখে এক বেলা খাওয়ালে এবং কারখানাগুলোর পরিবেশ দেখালে লোকসান নেই। এতে ক্রেতারা খুশি হয় এবং নিজ পণ্যের ব্র্যান্ডিং হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ বলেন, আমাদের চা শিল্পের উন্নয়নে ৯০ ভাগ অবদান শ্রমিকদের। আমরা শ্রমিকদের আরও ট্রেনিং দিয়ে তাদের দেশের বাইরে পাঠাতে উদ্যোগ নিতে চাই। এতে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা প্রয়োজন। চা শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী যা দিয়েছেন, এর কারণে চা শিল্প অনেক এগিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের জিডিপির আকার এখন ৪১৬ বিলিয়ন ডলারের। বিশ্বে ফরেন কারেন্সি সংকট রয়েছে। করোনার সময়েও সংকট ছিল। সে অবস্থার মধ্যেও আমরা ভালো করেছি। আমরা মধ্যম ও উন্নত মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হবো সবার অবদানে। চা শিল্প আমাদের লক্ষ্যকে আরও এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে চা বাগানের মোট শ্রমিকের সংখ্যা এক লাখ ৪৩ হাজার ৯৭ জন, আর মোট ক্ষুদ্রায়তন চা চাষির সংখ্যা প্রায় আট হাজার। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, ফ্রান্স, সাইপ্রাস, ব্রুনাই, গ্রিস, চীন, জাপানসহ ২৩টি দেশে চা পাতা রপ্তানি করা হচ্ছে।

সরকারের পথনকশা অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এতে স্বল্পমেয়াদি (২০১৬-২০২০), মধ্যমেয়াদি (২০১৬-২০২৫) ও দীর্ঘমেয়াদি (২০১৬-২০৩০) মোট ১১টি কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পথনকশায় ২০২৫ সাল নাগাদ ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, আর মাত্র ২০ দিন পর আমরা স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। চট্টগ্রামবাসী তাকিয়ে রয়েছেন টানেল উদ্বোধনের দিকে। আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা চলমান। এর পরও বকাউল্লাহরা বকেই যাবেন, সমালোচনা করেই যাবেন। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গড়ায় বিশ্বাসী, তিনি গড়েই যাবেন, উন্নয়ন করেই যাবেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০