Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 9:30 am

চারদিনে রিটার্ন ৩১ হাজার রাজস্ব ছয় হাজার কোটি

রহমত রহমান: করোনার ঝুঁকি আর ব্যবসায়ীদের বাঁধা উপেক্ষা করে চলেছে চারদিন ভ্যাট সেবা। খোলা ছিল দেশের ২৫২টি ভ্যাট সার্কেল। করোনার মধ্যে ভ্যাট অফিস খোলার সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলেছেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এনবিআর বলছে, আইনি বাধ্যবাধকতা আর জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিলে সহায়তার জন্য অফিস খোলা রাখা হয়।

শেষে ভয়কে জয় করে অনেকটা সফল হয় এনবিআর। চারদিনে প্রায় ৩১ হাজার রিটার্ন দাখিল করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর রাজস্ব আহরিত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার বেশি। এ দুযোর্গে আহরিত এ রাজস্ব সরকারের জন্য আর্শীবাদ হিসেবে কাজ করবে বলে জানান এনবিআর কর্মকর্তারা।

এনবিআর সূত্র জানায়, এনবিআরের আওতাধীন এলটিইউসহ ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট এবং ২৫২টি ভ্যাট সার্কেল রয়েছে। দেশে বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৯টি। জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিলে ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল চার দিনের জন্য সীমিত আকারে অফিস খোলা রাখা হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর‌্যন্ত খোলা হয়।

তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের কারণে ব্যাংক বন্ধ ছিল। সেজন্য তৃতীয় দিন রিটার্ন ও রাজস্ব কম আহরিত হয়। তবে শেষদিন বুধবার (১৫ এপ্রিল) করদাতাদের সুবিধার্থে বিকেল ৫টা পর‌্যন্ত খোলা রাখা হয়।

সূত্র জানায়, চারদিনে মোট ৩০ হাজার ৭৮১টি রিটার্ন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ম্যানুয়াল দাখিলপত্র ১০ হাজার ৯৯৫টি আর অনলাইনে দাখিলপত্র ১৯ হাজার ৭৮৬টি। চারদিনে মোট আহরিত রাজস্ব ছয় হাজার ২৮৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

এলটিইউসহ ১২টি কমিশনারেটের মধ্যে রাজস্ব আহরণে এগিয়ে এলটিইউ। এলটিইউতে চারদিনে মোট রিটার্ন দাখিল হয়েছে ১২৬টি। আর রাজস্ব আহরিত হয়েছে চার হাজার ১৯৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।

সূত্র আরো জানায়, চতুর্থ দিন বুধবার সারা দেশে রিটার্ন দাখিল হয়েছে ১৭ হাজার ৫৬০টি। আর আহরিত রাজস্ব চার হাজার ৬০০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়া তৃতীয় দিন মঙ্গলবার রিটার্ন দাখিল হয়েছে তিন হাজার ৬৮৩টি। আর রাজস্ব আহরিত হয়েছে ২৮৭ কোটি ২১ লাখ টাকা।

দ্বিতীয়দিন সোমবার ৫ হাজার ১৩টি ভ্যাট রিটার্ন দাখিল ও রাজস্ব আহরিত হয় এক হাজার ১৭০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর প্রথমদিন রোববার চার হাজার ২৫১টি ভ্যাট রিটার্ন দাখিল হয়। আর রাজস্ব আহরিত হয় ৩৩৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, প্রতিটি সার্কেল অফিসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করা হয়। এসময় প্রতিটি সার্কেলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের সব ধরনের নিয়ম পালন করা হয়। বিশেষ করে কর্মকর্তারা পিপিই পরিধান করে রিটার্ন জমা নেয়। আর করদাতাদের প্রবেশে হাত ধোঁয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখা হয়। জনসমাগম এড়াতে রিটার্ন দাখিল শেষে দ্রুত অফিস ত্যাগ করতে বলা হয়।

আরো পড়ুনতিনদিনে রাজস্ব ১৬৮২ কোটি ভ্যাট রিটার্ন দাখিল ১৩২২১ [1]

আরো পড়ুন-ভ্যাট রিটার্ন বেড়েছে ১৮ শতাংশ আর রাজস্ব ১৬৮ শতাংশ [2]

আরো পড়ুন-তিন ঘণ্টা খোলা থাকবে ভ্যাট অফিস [3]

এনবিআর সূত্র জানায়, সরকারি নির্দেশনার কারণে ২৫ মার্চ থেকে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান শাটডাউনে রয়েছে। কিন্তু নতুন মূসক আইন অনুযায়ী, প্রতিমাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। করদাতাদের জরিমানা এড়াতে ও আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় এনবিআর শুক্রবার (৯ এপ্রিল) ভ্যাট রিটার্নের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে।

যাতে বলা হয়, ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে লক্ষ্যে এনবিআর শুধুমাত্র ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে সরকারি সাধারণ ছুটির সময়ে সীমিত আকারে ভ্যাট সার্কেল অফিসসমূহ ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করা যাবে।

###