চার উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক : পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৌরবিদ্যুৎ সরবরাহ স্থাপনা, বিশ্বের সপ্তম বৃহৎ ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার, ভ্রাম্যমাণ গবেষণা তরী ও শিপিং করপোরেশনের পাঁচটি নতুন জাহাজসহ চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সূত্র: বাসস।

উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধনের পর সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এসব প্রকল্প দেশের জনগণের বিশেষ করে প্রকল্প আওতাধীন স্থানীয় জনগণের জীবন-মানের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’

এসব প্রকল্পের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ (প্রথম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে সৌরবিদ্যুৎ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির ‘ফোর টায়ার ন্যাশনাল ডেটা সেন্টার’ স্থাপন ও চট্টগ্রাম ভেটেরনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে কাপ্তাই লেকে নির্মিত ভ্রাম্যমাণ গবেষণা তরী (রিসার্চ ভেসেল) চালু করা হয়েছে। অপর প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বহরে পাঁচটি নতুন জাহাজ যুক্ত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় অশান্ত ছিল। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধান ও এর কারণ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছিল যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাটা রাজনৈতিক। কাজেই রাজনৈতিক পথেই তার সরকার এটি সমাধানের উদ্যোগ নেয়। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে তার সরকার এ সমস্যার সমাধান করেছে। সেখানকার এক হাজার ৮০০ অস্ত্রধারী আত্মসমর্পণ করেছে। তাদের আমরা পুনর্বাসন করেছি। এক সময়ের অন্ধকার পার্বত্য চট্টগ্রামে এখন বিদ্যুতের আলো ছড়াচ্ছে। শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি ফিরে এসেছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে এ বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতো। স্বাধীনতার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্ত পরিবেশ ছিল। কিন্তু ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্ত হয়ে ওঠে।’ এ সময় ‘বিএনপির আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ছিল। এখন সেখানে উন্নয়নের ঢেউ উঠেছে। সোলার বিদ্যুৎ ব্যবহারের ফলে সেখানে রাতদিন কাজ হচ্ছে। অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হচ্ছে’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

ঢাকার বেইলী রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স নির্মাণসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বলে গ্রিড লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব না। এ কারণে আমরা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলোকিত করেছি।’

‘মুজিব বর্ষ’ উদ্যাপনকালে সারাদেশের প্রত্যেক ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাবার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের একটি ঘরও অন্ধকার থাকবে না। প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলবে। কাজের গতি বাড়বে, সময় বাড়বে। বিদ্যুতের আলোয় কাজ হবে।’

উদ্বোধনকালে চারটি প্রকল্প এলাকার প্রশাসন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়কমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুস সামাদ নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য দিক পৃথক ভিডিওচিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০