নিজস্ব প্রতিবেদক: মন্দা বাজারেও চার কার্যদিবসে নর্দান জুটের শেয়ারদর বেড়েছে ৫৯ টাকা। এর আগে প্রায় এক মাস টানা নিম্নমুখী ছিল এ কোম্পানির দর। তবে এখন কী কারণে শেয়ারদর ঊর্ধ্বমুখী তা বলতে পারছে না বাজার-সংশ্লিষ্টরাসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, চার কার্যদিবস আগে প্রতিটি শেয়ারদর ছিল ৪৪২ টাকা। গত সপ্তাহের শেষদিন যা লেনদেন হয় ৫০১ টাকায়। এদিকে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধিতে এ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। কেউ কেউ দর বৃদ্ধিকে ‘স্বাভাবিক’ বললেও অধিকাংশ বিনিয়োগকারী বলছেন ‘কৃত্রিমভাবে’ এ শেয়ারের দর বাড়ানো হচ্ছে।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনঙ্গ মোহন রায় শেয়ার বিজকে বলেন, ‘শেয়ারের দর কেন বাড়ছে এর সঠিক কারণ বলা মুশকিল। এটা আমাদের জানার কথা নয়। তবে আমাদের আর্থিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে। সে কারণে হয়তো শেয়ারের দর বাড়তে পারে।’
এদিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাট খাতের কোম্পানি নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেডের পর্ষদ ছাড়ছে ‘ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক’ (আইডিবি)। সম্প্রতি আইডিবির স্বেচ্ছা পর্ষদ ত্যাগের প্রস্তাব গ্রহণ করেছে নর্দান জুটের পরিচালনা পর্ষদ।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে স্টক এক্সচেঞ্জ মারফত সংশ্লিষ্ট সবাইকে নর্দান জুট কর্তৃপক্ষ জানায়, আইডিবি দীর্ঘদিন ধরে কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি নিজ উদ্যোগে নর্দান জুটের পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইডিবিসহ হিসাব করলে ২৮ ডিসেম্বর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে কোম্পানির ৪৪ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ শেয়ার ছিল। আইডিবির ৩০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি হয়ে গেলে বর্তমান পর্ষদের অন্য পরিচালক ও উদ্যোক্তাদের শেয়ারহোল্ডিং দাঁড়াবে ১৪ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ। সূত্র জানায়, আইডিবির শেয়ার প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কিনে নেবে।
জানা গেছে, আগেও নর্দান জুটের শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছিল আইডিবি। তবে ঘোষণা ছাড়া উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রির সুযোগ না থাকায় সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা। অবশ্য এবার পর্ষদ থেকে পদত্যাগ করায় সে বাধা থাকছে না। ন্যূনতম শেয়ার ধারণের নির্দেশনা পরিপালনে কোম্পানির বর্তমান পর্ষদ সদস্যরা আইডিবির শেয়ারগুলো কেনার চেষ্টা করছেন। এদিকে ভিন্ন সূত্র জানিয়েছে, আইডিবির হাতে থাকা শেয়ারগুলো কেনার চেষ্টা করছে স্থানীয় একটি মার্চেন্ট ব্যাংকও।
১৯৮৪ সালে যাত্রা করে নর্দান জুট। ব্যবসায় অংশীদার হিসেবে শুরু থেকেই তাদের সঙ্গে ছিল উন্নয়ন সহযোগী আইডিবি। কোম্পানিটি পাটের সুতা প্রস্তুত ও রফতানি করে থাকে। প্রথমে একটি ইউনিটে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করলেও ২০১৬ সালের জুলাই থেকে দ্বিতীয় ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক উৎপাদনে যায় কোম্পানিটি। ১৯৯৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত নর্দান জুটের অনুমোদিত মূলধন ১০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন দুই কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। পুনর্মূল্যায়নজনিত উদ্বৃত্তসহ কোম্পানির রিজার্ভ ১৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ারের ৪৫ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ এর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে; বাকি ৫৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।