নিজস্ব প্রতিবেদক: টানা চার কার্যদিবস উত্থানের পর গতকাল উভয় বাজারে দর সংশোধন হয়েছে। বেশিরভাগ শেয়ারের দরপতনের পাশাপাশি সবগুলো সূচকের পতন হয়। সে সঙ্গে লেনদেনও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সূচক বারবার ওঠানামা করতে করতে বেলা ১২টার দিকে আগের দিনের চেয়ে ১১ পয়েন্ট বেড়ে বিক্রির চাপ বেড়ে গেলে সূচক নেমে যায়। শেষদিকে সামান্য বাড়লেও শেষ পর্যন্ত ডিএসইএক্স সূচক ২৬ পয়েন্ট নেতিবাচক অবস্থানে চলে যায়। এদিন ডিএসইতে ৬১ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়। দর বেড়েছে ২৭ শতাংশের। লেনদেন কমে ৪০০ কোটির ঘরে নেমে এসেছে। চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক শেয়ারদর ও লেনদেনে একই চিত্র লক্ষ করা যায়।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬ দশমিক ১৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে চার হাজার ৪০৮ দশমিক ১০ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক সাত দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ৭১ শতাংশ কমে এক হাজার সাত দশমিক ৬৪ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক সাত দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৫১ শতাংশ কমে এক হাজার ৫০৭ দশমিক ১৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৩৮০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৫ কোটি ৪৬ লাখ ১৪ হাজার টাকায়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪০৬ কোটি ৮০ লাখ ৫৩ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯৪ কোটি ৭৯ লাখ ৮১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮৭ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। এদিন ১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৩৭১ শেয়ার এক লাখ ২৫ হাজার ৯২২ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৬ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭৯টির, কমেছে ২৩৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪০টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৪০ পয়সা। এরপর স্কয়ার ফার্মার ২৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে ৭০ পয়সা। গ্রামীণফোনের ১৬ কোটি ছয় লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর কমেছে পাঁচ টাকা ১০ পয়সা। খুলনা পাওয়ারের ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর বেড়েছে ৮০ পয়সা। এসএস স্টিলের ১১ কোটি ৪২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া এডিএন টেলিকমের ৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা, বীকন ফার্মার আট কোটি ৭০ লাখ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের সাত কোটি ৯৪ লাখ, এসকে ট্রিমসের সাত কোটি ৯৪ লাখ ও সিঙ্গার বিডির সাত কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়ে আইসিবি দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে। এরপর সি পার্ল রিসোর্টের দর আট দশমিক ১০ শতাংশ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের ছয় দশমিক ৯৮ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের ছয় দশমিক ৬০ শতাংশ, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের পাঁচ দশমিক ৮৯ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের পাঁচ দশমিক ৭৯ শতাংশ, রূপালী লাইফের চার দশমিক ৯৬ শতাংশ, কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজের তিন দশমিক ৯৭ শতাংশ, হাইডেলবার্গ সিমেন্টের তিন দশমিক ৮৯ শতাংশ ও ভিএফএস থ্রেডের দর তিন দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়েছে।
৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে সিলকো ফার্মা। জিলবাংলা সুগার মিলের দর ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৯ শতাংশ, নর্দার্ণ জুটের সাত দশমিক ৯৯ শতাংশ, এআইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ছয় দশমিক ৮৪ শতাংশ, রিং শাইনের ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইলের ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ, কপারটেকের সোয়া ছয় শতাংশ, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের ছয় শতাংশ ও স্টাইলক্রাফটের দর পাঁচ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমেছে।
অন্যদিকে সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩১ দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ কমে আট হাজার ১৩৯ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৫ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা দশমিক ৪১ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৪২৪ দশমিক ১৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৩৮ কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ১৬৪টির, অপরিবর্তিত ছিল ১৮টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৩ কোটি ৪০ লাখ ৪১ হাজার ৯০৮ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার ১৩৪ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৬০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে এডিএন টেলিকম। কোম্পানিটির ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। এর পরের অবস্থানগুলোয় থাকা লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের ৮১ লাখ, এনবিএলের ৭৮ লাখ, এসএস স্টিলের ৫৫ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৫৪ লাখ, আরডি ফুডের ৫৩ লাখ, ফরচুন শুজের ৪৩ লাখ, বেক্সিমকোর ৩৩ লাখ, প্যারামাউন্ট টেক্সের ৩১ লাখ ও গ্রামীণফোনের ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।