মান্না আতোয়ার, বগুড়া: উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের হাট রণবাঘা। ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত চার ঘণ্টার বাজার। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা আসেন এ বাজারে মাছ কেনার জন্য।
বড় দুটি টিনের চালের নিচে মাছের পসরা সাজিয়ে বসেন ব্যবসায়ীরা। সূর্য ওঠার আগেই লম্বা সারি মাছভর্তি ট্রাক-লরি-ভটভটির। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার এ আড়তে প্রতিদিন চার ঘণ্টা হয় মাছ বিকিকিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের রণবাঘা বাসস্ট্যান্ড থেকে আড়তের দিকে যাওয়া রাস্তায় মাছভর্তি সারিবদ্ধ যানবাহন। আড়তে প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাছ আসে। রংপুর, ঢাকা, বগুড়া, সিলেট, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন বাজারের পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা এ বাজারে মাছ কেনেন।
রণবাঘা মাছ আড়তের ব্যবসায় সমিতির সভাপতি নাজির হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম জানান, ৩৩ বছর ধরে এ আড়ত চলছে। এখানে প্রায় ২০ জন আড়ৎদার রয়েছেন। প্রতিদিন শতাধিক ব্যাপারি মাছ কিনতে নিয়মিত আসেন এবং দুই শতাধিক কর্মচারী ও শ্রমিক কাজ করেন। প্রতিদিন এ আড়তে ২০-২৫ লাখ টাকার মাছ বেচাকেনা হয়। দুই শতাধিক পরিবারের সংসার খরচ চলে চার ঘণ্টার এ বাজারে কাজ করে।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, নন্দীগ্রাম উপজেলায় পাঁচ হাজারের বেশি ব্যক্তি মালিকানা পুকুর আছে। এসব পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে দেশি মাগুর, বিদেশি মাগুর, শিং, কৈ, পাঙাশ, কাতল, সিলভার কার্প, গ্রাসকাপ ও বিদেশি পুঁটিসহ প্রায় ৩০ জাতের মাছ চাষ হয়। এ বাজারে পাওয়া যায় সেই মাছ।
স্থানীয় মাছচাষি জয়নাল আবেদীন জানান, তার একটি পুকুর আছে। মূলত শখের বসে মাছ চাষ শুরু করলেও লাভজনক হওয়ায় বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করছেন।
আড়তদার এলাহী বক্স, রিগেন, মোকাব্বেল জানান, প্রতিদিন এ আড়তে লাখ লাখ টাকার মাছ বেচাকেনা হলেও এ বাজারের উন্নয়ন হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই শেড দিয়ে পানি পড়ে। নেই পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। আড়তটির উন্নয়ন না হওয়ায় আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অনেক সময় আড়তের ভেতরে পানি জমে যায়।