চার বছর পর সুদের হার বাড়াল ভারত

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০১৪ সালের জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো সুদের হার বাড়িয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল বুধবার রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) এ ঘোষণা দেয়। এ সময় মূল্যস্ফীতির হার নিয়ে দুশ্চিন্তার কথা জানায় ব্যাংকটি। এ হার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর এএফপি।
প্রতিবেদন মতে, রেপোর হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ছয় দশমিক ২৫ শতাংশে উন্নীত করেছে আরবিআই। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ সুদের হার বাড়িয়েছিল ব্যাংকটি। ওই সময়ে সুদের হার আট শতাংশে পৌঁছেছিল। এর পর কয়েক ধাপে সুদের হার কমানো হয়েছে।
মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি ক্রমাগত বেড়ে যাওয়ার ফলে আরবিআই ভোক্তা মূল্যস্ফীতি প্রাক্কলন ২০১৯ সালের মার্চের জন্য দশমিক তিন থেকে দশমিক চার শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়েছে। এপ্রিলে ভারতের বার্ষিক ভোক্তা মূল্যস্ফীতি ছিল চার দশমিক ৫৮ শতাংশ। টানা ছয় মাসের মতো এ হার আরবিআইয়ের মাঝারি মেয়াদের চার শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার ওপরে অবস্থান করছিল।
আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে ভারতের অর্থনীতি ও রুপি চরমভাবে আক্রান্ত হয়েছে। রুপি গত বছর এশিয়ার মুদ্রাগুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা অবস্থান ধরে রাখলেও চলতি বছর সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে নেমে গেছে। তবে ২০১৬ সালের নভেম্বরে মুদ্রারহিতকরণ এবং পরের বছর জুলাইয়ে ন্যাশনাল গুডস অ্যান্ড সার্ভিস ট্যাক্স আরোপে অর্থনীতি কিছুটা টালমাটাল হলেও সম্প্রতি সেখান থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর প্রভাবে ৩১ মার্চ সমাপ্ত চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ভারতে সাত দশমিক সাত শতাংশ হারে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন সুদের হার বৃদ্ধি দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শ্লথ করে দিতে পারে।
গত মে মাসে ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৪ সালের পর প্রথমবারের মতো তাদের মূল সুদের হার বৃদ্ধি করে। চীনও মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদহার বৃদ্ধির পর একটি স্বল্পমেয়াদি হার বৃদ্ধি করে। শুধু এশিয়ায় নয়, আরবিআইয়ের গতকালের বৈঠকটি এমন এক সময় হয়েছে, যার এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সভা হবে, যেখানে মার্কিন সুদের হার বৃদ্ধি করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মুম্বাইয়ের বার্কলেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ট্রেডিং প্রধান অনিন্দ্য দাশগুপ্ত বলেন, মূলত তেলের মূল্য আরও বাড়ায় এবং রুপি আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়তে থাকায় সুদের হার বৃদ্ধির ইঙ্গিত ছিল। তিনি বলেন, যদি রেপো হার বৃদ্ধি না করা হয়, তবে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশ্বাসযোগ্যতা কমিয়ে দেবে, কারণ এশিয়ার অনেক দেশই এরই মধ্যে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিয়েছে।
এপ্রিলের নীতিনির্ধারণী বৈঠকের পর তিন মাসের সার্বভৌম ট্রেজারি বিলের ইল্ড ৩০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে ছয় দশমিক ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ১০ বছর মেয়াদি বন্ডের ইল্ড এবং রেপো হারের পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ১৯৫ বেসিস পয়েন্টে, যা ২০০৯ সালের মার্চের পর থেকে সর্বোচ্চ। চলতি বছর ডলারের বিপরীতে রুপি চার দশমিক সাত শতাংশ দর হারিয়েছে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০