ঘোষণা ছাড়াই বাড়ছে দাম

চার মাসে ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ানো হলো ৪৭.৬২%

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিজেল ও কেরোসিনের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছে গত ৪ নভেম্বর। এ সময় দুই জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বা ২৩ দশমিক শূন্য আট শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর প্রভাবে বাস ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রাক ভাড়াও বেড়ে গেছে। এছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে নানা মহলের সমালোচনার শিকার হচ্ছে সরকার।

যদিও কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়া অনেকটা গোপনে বৃদ্ধি করা হচ্ছে আরেক জ্বালানি পণ্য তথা ফার্নেস অয়েলের দাম। গত চার মাসে এ জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে লিটারে ২০ টাকা বা ৪৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা হয় ফার্নেস অয়েল। এর মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনেই যায় ফার্নেস অয়েলের প্রায় ৯০ শতাংশ। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে এ জ্বালানি তেলের ব্যবহার নেই বললেই চলে। তাই ফার্নেস অয়েলের দাম অনেকটাই গোপনে বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এমনকি জনস্বার্থে এর দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনও জারি করা হচ্ছে না। তবে ফার্নেস অয়েলের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। 

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্যমতে, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল ফার্নেস অয়েলের দাম লিটারে ১৮ টাকা কমানো হয়েছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে নি¤œমুখী থাকায় এ জ্বালানি তেলের দাম সে সময় কমিয়ে লিটারে ৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপর পাঁচ বছর তিন মাস দেশের বাজারে এ দাম স্থিতিশীল ছিল। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে এর মধ্যে ফার্নেস অয়েলের দাম ওঠানামা করে।

এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস ধরেই টানা বাড়ছে ফার্নেস অয়েলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। এতে গত ৪ জুলাই ফার্নেস অয়েলের দাম ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে সময় এ জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে হয় লিটারে ৫৩ টাকা। এর তিন মাস পর ৮ অক্টোবর আবারও বাড়ানো হয় ফার্নেস অয়েলের দাম। সে সময় এ জ্বালানি পণ্যটির দাম লিটারে ছয় টাকা বা ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। এতে ফার্নেস অয়েলের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯ টাকা/লিটার।

সূত্রমতে, দেশের বাজারে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হলো ৪ নভেম্বর। এ নিয়ে নানা মহলের সমালোচনার মাঝেই পরের দিন অর্থাৎ ৫ নভেম্বর গোপনে আরেক দফা বাড়ানো হয় ফার্নেস অয়েলের দাম। লিটারে তিন টাকা বা পাঁচ দশমিক শূন্য আট শতাংশ বাড়ানো হয় এ দাম। এতে জ্বালানি পণ্যটির দাম বেড়ে দাঁড়ায় লিটারে ৬২ টাকা। তবে লোকসানের অজুহাতে আগামীতে আবারও ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ানো হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ প্রসঙ্গে বিপিসির পরিচালক (অর্থ ও বিপণন) কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রথম দিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম অনেক কমে গিয়েছিল। পরে আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে। গত ৯ মাস ধরে তা ক্রমাগত বাড়ছে, এখনও যা অব্যাহত আছে। ফলে গত তিন মাস বড় অঙ্কের লোকসান দিতে হচ্ছিল। তাই তেলের দাম বৃদ্ধি করতে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে ফার্নেস অয়েল বিক্রি হচ্ছে মাত্র তিনটি দেশে। এগুলো হলোÑঅ্যাঙ্গোলা, বলিভিয়া ও সেনেগাল। তাই বাংলাদেশে ফার্নেস অয়েলের দাম বর্তমানে গ্রহণযোগ্য পর্যায়েই রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০