নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকে চেক জমা দিয়েই শেয়ার কেনার সুযোগ করে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে এক্ষেত্রে চারটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। গতকাল বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় এই সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
বিএসইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘এখন থেকে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে চেক, পে অর্ডার, ডিমান্ড ড্রাফট ও বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত অন্য কোনো মাধ্যমে টাকা পেলে, সেই টাকা নগদ করার আগে লেনদেন করতে পারবে।’ চেকে লেনদেন করার সুযোগ দেয়ার পেছনে চার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। বিনিয়োগকারীর জমা দেয়া চেক যদি ব্রোকারেজ হাউস বা মার্চেন্ট ব্যাংক সেদিন বা পরের কর্মদিবসে ব্যাংকে জমা না দেয়, তাহলে পরের এক বছরের জন্য আইপিওতে যোগ্য বিনিয়োগকারীর সুযোগ-সুবিধা হারাবে তারা। সেই চেক যদি বাউন্স করে, অর্থাৎ ব্যাংক হিসাবে যদি সমপরিমাণ টাকা পাওয়া না যায়, তখন ব্রোকারেজ বা মার্চেন্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে সে টাকা দিতে হবে। সেটিও যদি না হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠান আইপিওতে এক বছরের জন্য সব সুবিধা হারাবে। অপরদিকে, যে গ্রাহকের চেক বাউন্স করবে, তিনি পরের এক বছর শেয়ারবাজারে আর লেনদেন করতে পারবেন না। প্রতিটি স্টক ব্রোকারকে ডিজঅনার চেকের তালিকা মাস শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে বিএসইসিকে পাঠাতে হবে।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর গ্রাহকের চেক ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবে নগদায়ন বা জমা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী লেনদেন করতে পারবে না বলে ব্রোকারেজ হাউসগুলোয় ডিএসই চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে বিএসইসির সংযুক্ত করা এক নির্দেশনার বিষয়ে বলা হয়, গত ২২ সেপ্টেম্বর কমিশনার আব্দুল হালিমের সভাপতিত্বে ডিএসইর সিআরও এবং বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কমিশনের এসআরআই বিভাগের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে বলা হয়। সেই সিদ্ধান্তের মধ্যে ১ নম্বরে ছিল, প্রতি ট্রেকহোল্ডার বিনিয়োগকারীর চেক নগদায়নের পরে ক্রয় আদেশ বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের নির্দেশনা পরিপালন করতে বলা হয়েছিল।
বিএসইসির এ সিদ্ধান্তের পর ১৩ অক্টোবর থেকে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যাতে ওইদিন ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে যায়। এরপর থেকে টানা পতনে রয়েছে বাজার। এই পরিস্থিতিতে বাজার মধ্যস্থতাকারীদের দাবির আলোকে চেকে লেনদেন করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো বিএসইসি। এতে করে আপাতত শেয়ারবাজারের জন্য একটি বড় নেতিবাচক বিষয় কেটে গেল বলে মনে করেন বাজার-সংশ্লিষ্টরা।