প্রতিনিধি, নওগাঁ: হঠাৎ বেড়ে যাওয়া চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণে নওগাঁয় অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরের বৃহত্তম চালের মোকাম নওগাঁর ৭টি চালকলে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় কোনো চালকলে অতিরিক্ত মজুত না পাওয়া গেলেও নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী এলাকার নাসিম চালকলে ধান অধিক সময় মজুত করে রাখায় সেখানে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. নিলয় রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। তিনি জানান, খাদ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসায় চালের বাজারে মূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে মজুত করার বিষয়টি পাওয়া যায়নি। তবে মিল মালিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে কেউ যেন ধান-চাল মজুত করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করে। চাল নিয়ে কোনো সিন্ডিকেট হতে দেয়া হবে না। এজন্য পর্যবেক্ষণ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে ধান মজুত করে ঘাটতির অজুহাতে চালের দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত। নওগাঁর পাইকারি বাজারে, ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় প্রকার ভেদে সব ধরনের চালে বেড়েছে ৩৫০ থেকে ৪শ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি স্বর্ণা-৫ চাল ৪৪ থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০। আটাশ ও পারিজা জাতের চাল ৫০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকায়। জিরা, মিনিকেট ও নাজির শাইল জাতের চাল ৬০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৮ টাকা কেজি দরে, কাটারি জাতের চাল ৬৫ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে।
খুচরা চাল বিক্রেতারা বলছেন, একেবারে অস্থির চালের বাজার দার। মিলগেটে সকালের দামের সঙ্গে মিল থাকছে না বিকালের দাম। পায়কারি মোকামেই ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় প্রকার ভেদে সব ধরনের চালে বেড়েছে ৩৫০ থেকে ৪শ টাকা।
জেলা চালকল মালিক গ্রæপের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলছেন, উৎপাদন ঘাটতির ফলে কিছুটা প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। তার সঙ্গে দেশের করপোরেট হাউসগুলোর আগ্রাসী ভ‚মিকা অস্থির করেছে বাজার দর। এ অঞ্চল থেকে প্রতিদিনই করপোরেট হাউসগুলো সরাসরি ধান ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। দাম বাড়াচ্ছেন ইচ্ছামতো। তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধান ক্রয় করা সম্ভব হচ্ছে না স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
জেলা চালকল মালিক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন জানালেন, হাতে গোনা কয়েকটি করপোরেট হাউসের দখলে চালের বাজার। মিল মালিকদের যে সিন্ডিকেটের দোষে দোষী করা হতো তা ছিল ২০ হাজার মিলারের। এখন সে সিন্ডিকেট কয়েকটি গ্রæপ কোম্পানির। যা আগামীতে রূপ নেবে ভয়াবহে।