নিজস্ব প্রতিবেদক: ভরা মৌসুমে চালের দাম বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যবসায়ীদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখালেন তাদেরই শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, শুষ্ক মৌসুমে চালের উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়। এখন সেই মৌসুম, কিন্তু হাওরের কথা বলে কৃত্রিমভাবে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে। দেশের উৎপাদিত মোট চালের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ হাওর এলাকায় হয়।
গতকাল মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি মজুত, সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি’ নিয়ে মতবিনিময় সভায় কথা বলছিলেন সংগঠনের সভাপতি।
গত বুধবার থেকে সারাদেশে অবৈধ মজুতদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা। প্রথম দিনে আট বিভাগে কয়েকশ প্রতিষ্ঠানে যায় অভিযানকারী দল; জরিমানা করা হয় প্রায় ২৪ লাখ টাকা।
জসিম বলেন, হাওরে এবার সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাতে বাজারে দাম বাড়ার কথা নয়।
কিছু ব্যবসায়ী চালের দাম বাড়াচ্ছে; সরকারের ধরপাকড় সঠিক, মনিটরিং অব্যাহত রাখা। মজুত করে কেন বেশি দামে বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা? নিজস্ব মিল ও অনুমোদন না থাকলে বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ধান-চালের ব্যবসায় যুক্ত না হয়, সে বিষয়ে আরেক অনুষ্ঠানে সতর্ক করেন খাদ্যমন্ত্রী। এ সময় সারাদেশে ধান-চাল মজুতদারদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান আরও জোরদার করার ঘোষণাও তিনি দেন।
মিলে এখন উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় চাল উৎপাদন খরচ কমে আসার কথা মন্তব্য করেÑএফবিসিসিআইয়ের অনুষ্ঠানে জসিম উদ্দিন প্রশ্ন করেন, তাহলে কেন কমছে না?
এ সময়ে চাল ব্যবসায়ীদের পক্ষে সিটি গ্রæপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ধান বেশি দামে কিনলে তো বেশি দামে চাল বিক্রি করব। মাত্র ১ শতাংশ ব্যবসায়ী খারাপ কাজ করছে, তাদের দায় তো সব ব্যবসায়ী নেবে না। চালের সরবরাহ যথেষ্ট রয়েছে, সমস্যা হবে না। ভোজ্যতেলের বিষয়ে তিনি বলেন, আগামী কোরবানির ঈদে তেলের ঘাটতি হবে না।
মসলা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে বলা হয়, মসলা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য হওয়ার পরও আমদানিতে শুল্ক দিতে হয় পচনশীল পণ্য ধরে। প্রতি টন এলাচে শুল্ক দিতে হয় তিন লাখ ৮৫ হাজার টাকা, কেজি প্রতি ৩৮৫ টাকা। গোলমরিচে প্রতি কেজিতে শুল্ক ২৭০ টাকা, আলু বোখারায় ৬৮ টাকা, কিসমিসে ৮৫ টাকা, বাদামে ৯৯ টাকা দিতে হয়।
মসলার ওপর আরোপিত শুল্ক পর্যালোচনার দাবি করেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। গত রোজার সময় আনা মসলা এখনও বিক্রি হয়নি জানিয়ে তারা বলেন, আগামী ঈদে মসলা নিয়ে কোনো সংকট তৈরি হওয়ার কথা না।