নিজস্ব প্রতিবেদক: হাওরে ফসলহানি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলহানির প্রেক্ষাপটে রোজার আগে চালের আমদানি শুল্ক সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে সরকারের কাছে। আশা করা হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সরকার আবার শুল্কমুক্ত চাল আমদানির সুবিধা দেবে। এতে দেশে যে পরিমাণ ফসলহানি হয়েছে তা পূরণ হবে। সঙ্গে কারসাজি করে বাড়ানো চালের দামও কমবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। খাদ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে চালকল মালিকদের সঙ্গে খাদ্য মন্ত্রণালয় ও খাদ্য অধিদফতরের বৈঠকে শেষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বদরুল হাসান ও চালকল মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে চালের কোনো সংকট নেই। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হাওরে ফসলহানির সুযোগ নিয়ে কৃত্রিমভাবে চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। চালকল মালিকদের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের কাছে মজুত সম্পর্কে যে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, এতে দেখা গেছে, তাদের কাছে তেমন মজুত নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব কাজ করছেন।
দেশে খাদ্যসংকট নেই। এরপরও কেন চাল আমদানিÑ এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, চাল আমদানি হলে ব্যবসায়ীরা এ অসৎ তৎপরতা চালাতে পারবেন না। তবে চাল আমদানির অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। উদ্বৃত্ত মজুদ থাকার কথা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও বাজারে কারসাজি এড়াতে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম জানিয়েছেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশেই নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কিছুর ওপর সাধারণত শুল্ক থাকে না, আমাদের এখানেও দীর্ঘদিন ছিল না। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় চাল আমদানি করায় এখন শুল্ক আরোপিত রয়েছে। তবে এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সাময়িকভাবে আগের অবস্থায় নেওয়ার প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছি, তাদের বিবেচনায় আছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অকাল বন্যায় হাওরের ছয় লাখ টনের মতো ধান নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে চালের মজুতে কোনো সমস্যা নেই। এখন মজুদ সাড়ে পাঁচ লাখ টন।
এদিকে আসন্ন বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আশাবাদী কামরুল বলেন, এক কোটি ৯১ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ছিল এ বছর। তবে হাওর ও অন্যান্য অঞ্চলে দুর্যোগে ১৫ লাখ টন ধান নষ্ট হতে পারে যাতে ১০ লাখ টনের মতো কম চাল সংগৃহীত হবে। ফলে এখনও আমরা কমপক্ষে এক কোটি ৮০ লাখ টন চাল সংগ্রহ করতে পারব।