নিজস্ব প্রতিবেদক: চাহিদার মাত্র ৩৩ ভাগ ঋণ পান দেশের এসএমই উদ্যোক্তারা। আর বিতরণ করা ঋণের মাত্র ১৯ ভাগ পান গ্রামীণ উদ্যোক্তারা। অথচ মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা। গতকাল এসএমই ফাউন্ডেশন ও ইউনেস্ক্যাপের উদ্যোগে আয়োজিত ‘রিথিংকিং এমএসএমই ফাইন্যান্স: আ পোস্ট-ক্রাইসিস পলিসি এজেন্ডা’ শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক জাকের হোসেন বক্তব্য দেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, কভিড-১৯-এর কারণে দেশের ৯৪ ভাগ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিক্রি কমেছে। ২১ ভাগ প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠানের ৩৭ ভাগ কর্মী কাজ হারিয়েছেন এবং ৭০ ভাগ চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে ছিলেন। শতকরা ৮৩ ভাগ প্রতিষ্ঠান লোকসানে পড়েছে এবং ৩৩ ভাগ প্রতিষ্ঠান ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারেনি।
এজন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের পরিমাণ আরও বাড়ানো প্রয়োজন কিংবা সহজ শর্তে অর্থায়নের ব্যবস্থা করা দরকার বলে জানান বক্তারা। শিল্পসচিব বলেন, দেশের শিল্প খাতের কর্মসংস্থানের ৮৫ ভাগই এসএমই খাতের অবদান। এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বলেন, মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এসএমই উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রয়োজন। এজন্য ডিজিটাল সেবা চালু করা যেতে পারে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন জানান, দেশের প্রায় ৮১ লাখ এসএমই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮ লাখ তথা ৭০ ভাগ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর হলেও ঋণের ৮১ ভাগই পান শহরের উদ্যোক্তারা। নারী-উদ্যোক্তারা পান মাত্র সাত ভাগ। কভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি ও ক্লাস্টারভিত্তিক অর্থায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রসারের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণের আওতায় আনার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত ও সুপারিশ গ্রহণের লক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউনেস্ক্যাপ ব্যাংককের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, চেম্বার/অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিসহ এসএমই উদ্যোক্তা, গবেষক, শিক্ষাবিদ ও মিডিয়া প্রতিনিধিরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে এসএমই অর্থায়ন নিয়ে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে একটি বাংলাদেশের গবেষক ও অন্য দুটি যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির গবেষক ভার্চুয়ালি উপস্থাপন করেন।