নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকাল পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এদিন পুঁজিবাজারের সব সূচক কমেছে। সে সঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। তবে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতনেও বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ছিল সিরামিক খাতের শেয়ার। ফলে আলোচিত খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। দর বৃদ্ধির দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাত। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে যথাক্রমে ছিল পাট এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল আগ্রহে বেশি থাকা সিরামিক খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৫টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১টির দাম বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাগজ খাতে দর বেড়েছে ১ দশমিক ১০ শতাংশ। খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪টির শেয়ারদর বেড়েছে এবং বাকি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল।
দর বৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকা পাট খাতের শেয়ার দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে। আলোচ্য খাতে গতকাল ৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টি দর বেড়েছে এবং ১টির দর কমেছে। দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর বেড়ে গতকাল চতুর্থ স্থানে ছিল খাদ্য খাত। এছাড়া জীবন বিমা, আর্থিক, মিউচুয়াল ফান্ড, সিমেন্ট, বস্ত্র, টেলিকমিউনিকেশন, প্রকৌশল এবং ব্যাংক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়নি বা কমেনি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় ভ্রমণ খাতে শেয়ারদর কমেছে। খাতটিতে গতকাল শেয়ারদর কমেছে ১ শতাংশ। এ খাতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল এবং বাকি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর কমেছে। এরপর ছিল ট্যানারি খাত। গতকাল শেয়ারদর কমায় তৃতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে দর কমেছে দশমিক ২০ শতাংশ।
অপরদিকে গতকাল সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। খাতটিতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩২ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১০ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হওয়া প্রকৌশল খাত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। গতকাল চতুর্থ স্থানে থাকা জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ২৫৬ দশমিক ৮২ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ২০৮ দশমিক ৪৭ পয়েন্টে। তবে শরিয়াহ সূচক দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৭২ দশমিক ৯৬ পয়েন্টে।
ডিএসইতে গতকাল ৪২৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪ কোটি ৯৩ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৩০ কোটি ২০ লাখ টাকার। গতকাল ডিএসইতে ৩২৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৩৬টির বা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশের, শেয়ারদর কমেছে ৫৩টির বা ১৬ দশমিক ৬১ শতাংশের এবং ২৩৪টির বা ৭২ দশমিক ৪৫ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিটদর অপরিবর্তিত রয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৪৪৭ দশমিক ২১ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ১৬১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩৯টির এবং ৯৯টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সিএসইতে ৪২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।