নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীর নিউ ড্রাগন নামে একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্ট থেকে ক্যাসিনো খেলার সামগ্রী মাহাজং জব্দ করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। গতকাল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসব সামগ্রী জব্দ করা হয়। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মো. সহিদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ নেয়াজুর রহমান ও শামীমা আক্তারের নেতৃত্বে একটি দল বনানীর এ ব্লকের ১৮ নং সড়কের ২৩ নং বাড়ির দ্বিতীয় তলার নিউ ড্রাগন নামক চায়নিজ রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায়। সেখানে থেকে একটি ক্যাসিনো খেলার ইলেকট্রিক মাহাজং মেশিন উদ্ধার করা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আমদানিকারক নিনাদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল চীন হতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ২০টি কার্টুনে সাত সেট ক্যাসিনো খেলার মাহাজং মেশিন আমদানি করে। প্রতিষ্ঠানটি পণ্যসমূহ বিভিন্ন চায়নিজ নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয় করেন।
মহাপরিচালক জানান, নিউ ড্রাগন চায়নিজ রেস্টুরেন্ট হতে উদ্ধার করা গ্যাম্বলিং মেশিনটি একটি ইলেকট্রিক মাহাজং মেশিন; যা গ্যাম্বলিংয়ে ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। জানা গেছে, নিউ ড্রাগন চায়নিজ রেস্টুরেন্টে বিভিন্ন চায়নিজ নাগরিকের আনাগোনা ছিল যারা এ চায়নিজ গ্যাম্বলিংয়ে মত্ত ছিলেন। পণ্য চালান আমদানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং করে বিপুল পরিমাণ শুল্ককর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। আমদানিকারক সাতটি মাহাজং মেশিনের মূল্য ৪৭ হাজার ৮১৫ টাকা ঘোষণা দিয়ে পণ্য চালান খালাস করেছে।
যদিও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এ ধরনের প্রতিটি ইলেকট্রিক মেশিনের মূল্য দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা করে সাতটি মেশিনের মূল্য আনুমানিক ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সে হিসাবে পণ্যের আমদানি পর্যায়ে প্রযোজ্য শুল্ককর ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমদানিকারক আমদানি পর্যায়ে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ৯ লাখ ৯৬ হাজার ২৮৫ টাকা শুল্ককর ফাঁকি দিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। এ আমদানিকারকের আমদানি করা অপর ক্যাসিনো মাহাজং মেশিনগুলোর অবস্থান শনাক্ত ও উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া উদ্ধার করা পণ্য চালানের শুল্ককর ফাঁকির বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ১৯৪৫ সালে চীনে কমিউনিস্ট বিপ্লবের উত্থানকালে মাহাজং খেলায় গ্যাম্বলিং আসক্তির জন্য চীনে মাহাজংকে নিষিদ্ধ করা হয়। বর্তমানে ম্যাকাও ও হংকংয়ের ক্যাসিনোতে মাহাজং গ্যাম্বলিং হিসেবে ব্যবহƒত হয়।