নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের আগুনের ঘটনা খুবই সামান্য ঘটনা। শুধু শুধুই এটিকে অনেক বড় করে দেখানো হচ্ছে। চায়ের কেটলি থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে এ আগুন লেগে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। গতকাল শনিবার তদন্ত কমিটি দ্বিতীয়বারের মতো ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক (ঢাকা) সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
এর আগে গত ২০১০ সালে ২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০ তলা ভবনের চতুর্থ তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সে সময়েও বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিলো। গত বৃহস্পতিবারও বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে আগুনের লাগার জন্য শর্ট সার্কিটকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এবার চায়ের ইলেকট্রিক কেটলি হয়ে শর্ট সার্কিট থেকে এ আগুন লেগেছে বলে জানান এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।
গত বৃহস্পতিবার আগুন লাগার ঘটনায় সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, এবার আগুনে গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে যাওয়ার যে তথ্যের কথা বলা হয়েছে- তা সত্য নয়। জিএমের রুমে আগুন লেগেছিল। ওই রুমে থাকা চায়ের ইলেকট্রিক কেটলিতে শর্ট সার্কিট থেকেই এ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে আমাদের ধারণা। এতে ওই রুমে থাকা কয়েকটি চেয়ার-টেবিল পুড়েছে। তবে এ আগুনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ নথি, কম্পিউটার, কাগজ ও ফাইলের ক্ষতি হয়নি।
তিনি জানান, শনিবার সাধারণ ছুটি এবং রোববার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বন্ধের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ আছে। স্বাধীনতা দিবসের পর সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তদন্ত করা হবে। এরপরই চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে গতকাল পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এদিন মতিঝিল থানার কয়েক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে যান। পরিদর্শন শেষে তাৎক্ষণিকভাবে তারা কিছু না বলেই থানায় ফিরে যান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ৩০তলা ভবনের ১৪ তলায় বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের একটি কক্ষে গত বৃহস্পতিবার রাতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘণ্টা খানেকের চেষ্টার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় গত শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক নুরুল ইসলাম মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নং-১৫৭৩।
আগুন লাগার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতি ও কারণ জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধান করা হয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ জামালকে। অপর দুই সদস্য হলেন ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক লে. কর্নেল (অব.) মো. মাহমুদুল হক খান চৌধুরী ও তফাজ্জল হোসেন। কমিটি আগামী ২৮ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
একই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস আলাদা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ফায়ার সার্ভিস ঢাকার ডেপুটি ডিরেক্টর (ডিডি) সমরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ও ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি অর্থ মন্ত্রণালয় থেকেও কমিটি গঠন করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গত শুক্রবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি করা হবে। এ নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।

Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:53 am
চায়ের কেটলি থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আগুন – ফায়ার সার্ভিস
পত্রিকা,শেষ পাতা ♦ প্রকাশ: