নিজস্ব প্রতিবেদক:চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে চলমান শান্তিপূর্ণ ও আইনসম্মত আন্দোলন ঠেকাতে হুমকির বদলে আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক মজুরি নির্ধারণের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সামান্য কিছু সুবিধাসহ দৈনিক মাত্র ১২০ টাকা মজুরিতে আট ঘণ্টা, কখনও আরও বেশি সময় কাজের বিপরীতে এই সামান্য পারিশ্রমিক বৈষম্যমূলক ও সংবিধান পরিপন্থি। চলমান সমস্যার সমাধানে বাগানের মালিকদের ঔপনিবেশিক মানসিকতা পরিহার করতে হবে ও সরকারকে চা-শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করে, ন্যায্য ও মানবিক উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে চা-বাগান শ্রমিকদের ক্ষেত্রে শ্রম আইনের কার্যকর বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য সম-খাতের সর্বনি¤œ মজুরি বিবেচনায় নিয়ে জীবনধারণের উপযুক্ত ও চা-শ্রমিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য, যৌক্তিক পারিশ্রমিক নির্ধারণে বাগানমালিক ও সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জমান বলছেন, সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ গবেষণাভিত্তিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী চা-শ্রমিকদের প্রাপ্ত আবাসনসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নিয়েও এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, দেশের অন্য যেকোনো খাতের তুলনায় চা-শ্রমিকদের মজুরি সর্বনিন্ম ও বৈষম্যমূলক।
তিনি বলেন, চা-শ্রমিকদের দেশের নাগরিক হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তাদের প্রাপ্য অধিকার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে চলমান আইনসম্মত আন্দোলনের যৌক্তিকতা অনুধাবনের পাশাপাশি সমতাভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে চা-শ্রমিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য যৌক্তিক মজুরি নির্ধারণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান আন্দোলনের মানবিক সমাধানে সুপারিশসহ টিআইবি কর্তৃক পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনটি এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও বাস্তবমুখী।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে দেশের সব চা-বাগানে শনিবার (১৩ আগস্ট) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু হয়। বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকে সেদিন সকাল ৬টা থেকে এই ধর্মঘট শুরু হয়।
দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে কর্মবিরতির মধ্যেই শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনায় বসেন চা-শ্রমিকরা।