চিকিৎসকের দায়িত্ব

চিকিৎসকের দায়িত্ব কি শুধুই রোগীকে সুস্থ করে তোলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ? না কি সার্বিকভাবে সমাজের প্রতিও সমান দায়িত্ব রয়েছে। একজন চিকিৎসকের মধ্যে থাকতে হবে সহমর্মিতা ও সংবেদনশীলতা। এ দুয়ের সমন্বয়ে রোগীকে উপযুক্ত সেবা দেওয়াই চিকিৎসকের প্রধানতম দায়িত্ব। কর্তব্যবোধ ও মানবিকতাও তার পেশার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দেশভেদে চিকিৎসকের দায়িত্বে ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে সব ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব প্রায় সমান।
অনেক দেশের চিকিৎসককে তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করতে হয় প্রেসক্রিপশন, সার্টিফিকেট ও রসিদে। একজন চিকিৎসক রোগী দেখার জন্য কত টাকা নেন, তাও প্রকাশ্যে লিখে রাখার বিধান রয়েছে অনেক দেশে। প্রেসক্রিপশন এমনভাবে লিখতে হবে যেন সবাই তা বুঝতে পারে। ওষুধের জেনেরিক নাম, ব্র্যান্ডের নামও তিনি লিখবেন।
রোগী ও তার চিকিৎসা সম্পর্কে পরিবারকে অবহিত করা চিকিৎসকের কর্তব্য। একজন চিকিৎসককে অন্তর্বিভাগীয় চিকিৎসার ক্ষেত্রে কমপক্ষে কোনো রোগীর চিকিৎসাসংক্রান্ত নথিপত্র চিকিৎসা শুরু হওয়ার দিন থেকে শুরু করে তিন বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে হবে। এমন আইন রয়েছে ভারতেও। দেশটির আইনে এ বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা আছে। এমনকি অন্তর্বিভাগীয় চিকিৎসার নথিপত্র রোগী চাইলে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেখাতে হয় ভারতে।
একজন চিকিৎসক অন্য চিকিৎসক কিংবা তার ওপর নির্ভরশীল আত্মীয়দের চিকিৎসা করবেন স্বেচ্ছায়। প্রয়োজন হলে পরিস্থিতি বিচার করে গাড়ি ভাড়া নেওয়া যেতে পারে। অন্য চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া বা দেওয়ার ক্ষেত্রেও খোলা মনের অধিকারী হতে হবে। রোগী বা তার আত্মীয়দের অন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানানো যেতে পারে স্বচ্ছতার জন্য। পেশার গরিমা বজায় রাখার পাশাপাশি কোনো অযোগ্য ব্যক্তি যেন এ পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে না পারে, সে বিষয়টিকেও দেখতে হবে একজন স্বীকৃত চিকিৎসককে। অন্য কোনো চিকিৎসক অন্যায্য উপায় অবলম্বন করলে তা প্রকাশ করে দেওয়াও একজন চিকিৎসকের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
প্রায় সব দেশের আইনে বলা রয়েছেÑকোনো রোগীকে অবহেলা করা চলবে না। চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পাশাপাশি ওষুধ বিক্রির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হওয়া যাবে না। এমনকি কোনো কমিশন নেওয়া যাবে না। অজ্ঞাত কোনো ওষুধ রোগীর ব্যবহারের জন্য দেওয়া যাবে না। প্রেসক্রিপশন লেখার সময় চিকিৎসক তার কোনো কোড ভাষায় লিখবেন না যেন রোগী কোনো একটি নির্দিষ্ট দোকান থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য থাকেন। রোগীর অনুমতি ছাড়া কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। এর মধ্যে রয়েছে রোগীর ছবি, রিপোর্ট প্রভৃতি কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট যোগ্যতা ছাড়া কোনো বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করা যাবে না।
রোগীর সঙ্গে অনৈতিক ব্যবহার করা যাবে না। তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা যাবে না। কন্যাভ্রƒণ হত্যার উদ্দেশ্যে লিঙ্গ নির্ণয় পরীক্ষা করা যাবে না।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০