শেয়ার বিজ ডেস্ক: দেহঘড়ির রহস্যের জন্য এ বছর চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিজ্ঞানী। গতকাল বিজয়ী হিসেবে জেফ্রি সি হল, মাইকেল রসবাস ও মাইকেল ডবিউ ইয়ংয়ের নাম ঘোষণা করেছে সুইডেনের কারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট। খবর: এএফপি।
এবার নোবেল পুরস্কারের ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার এ তিন বিজ্ঞানী ভাগ করে নেবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে বলে বার্তা সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর জীবজগতের ওপর আহ্নিক গতির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। এ আহ্নিক গতির সঙ্গে মানুষসহ বিভিন্ন প্রাণীর অভিযোজনের ক্ষেত্রে সরাসরি ভ‚মিকা রাখে এর অভ্যন্তরস্থ একটি জৈবিক ছন্দ বা দেহঘড়ি। দেহাভ্যন্তরের এ ঘড়ি ‘সারেকডিয়ান রিদম’ নামেও পরিচিত। মূলত শরীরের তাপমাত্রা, নিঃসৃত হরমোনের মাত্রা, বিপাকক্রিয়া, ঘুম ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে এ ঘড়ি। বহির্জগতের সঙ্গে শরীরের সামঞ্জস্য বিধানে ছোটখাটো ব্যত্যয়ে শরীরে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
দেহাভ্যন্তরের এ জৈবিক ছন্দ আবিষ্কারের জন্য মৌমাছির ওপর গবেষণা চালান ওই তিন মার্কিন বিজ্ঞানী। তারা ওই মৌমাছির শরীরে একটি বিশেষ ধরনের জিন খুঁজে পান, যা জৈবিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় তারা দেখেন, ওই বিশেষ জিন থেকে পাঠানো সংকেতের কারণে রাতের বেলা দেহকোষে বিশেষ এক ধরনের প্রোটিন জমা হয়। এ প্রোটিন পরবর্তী সময়ে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় এবং একসময় পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায়। এভাবে প্রত্যেক রাতে বিশেষ জিনের পাঠানো সংকেতে দেহকোষে প্রোটিন জমা হয়, যা বহির্জগতের সময় ধারণার মতো দেহের ভেতরেও একটি নিজস্ব সময়ের বৃত্ত তৈরি করে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার পদার্থ, বুধবার রসায়ন, শুক্রবার শান্তি ও আগামী ৯ অক্টোবর অর্থনীতিতে এবারের নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হবে। আর সাহিত্য পুরস্কার কবে ঘোষণা করা হবে, সে তারিখ পরে জানানো হবে বলে নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে।
এর আগে ‘জীবদেহ কেমন করে ত্রুটিপূর্ণ কোষ ধ্বংস করে নিজের সুরক্ষার ব্যবস্থা করে, আর কোষ কীভাবে নিজের আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে সুস্থ থাকে’ সেই রহস্য আলো ফেলে গত বছর চিকিৎসায় নোবেল পেয়েছিলেন জাপানের বিজ্ঞানী ইয়োশিনোরি ওশুমি।